প্রিয় শিক্ষক, অভিভাবক এবং সহপাঠীগণ, আজকের বিতর্ক প্রতিযোগিতার বিষয় হলো "মোবাইল ফোনের উপকারিতা"। এই প্রতিযোগিতায় আমরা মোবাইল ফোনের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরবো এবং এর সুবিধাগুলো সম্পর্কে আলোচনা করবো। মোবাইল ফোনের উপকারিতা এবং অপকারিতা বিষয়ক এই প্রতিবেদনটি বিতর্ক প্রতিযোগিতার অংশগ্রহণকারীদের জন্য অনেক উপকারী হবে।
আধুনিক যুগে মোবাইল ফোন আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। শিক্ষা, যোগাযোগ, বিনোদন, ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা, গবেষণা, এমনকি কৃষিকাজেও এর ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মোবাইল ফোনের অসংখ্য সুবিধা আমাদের জীবনকে করে তুলেছে আরও সহজ, দ্রুত এবং স্বাচ্ছন্দ্যময়।
মোবাইল ফোনের উপকারিতা বিতর্ক প্রতিযোগিতা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। তাই আপনি যদি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে চান এবং আপনার বিষয়টি হয় মোবাইল ফোনের উপকারিতা নিয়ে তবে আজকের এই লেখাটি পরে আমি আশা করছি অনেক বেশি উপকৃত হবেন। চলুন তাহলে মোবাইল ফোনের সুবিধা গুলো জেনে নেওয়া যাক:
(toc) #title=(এক নজরে সম্পূর্ণ লেখা পড়ুন)
প্রথম বক্তা (সম্বোধনী সংলাপ)
আমার সামনে উপস্থিত বিজ্ঞ বিচারক মন্ডলী, আমার সহপাঠী এবং দর্শকদের জানাই আমার পক্ষ থেকে একান্ত শুভেচ্ছা ও সালাম। আসসালামু আলাইকুম। আজকের বিতর্কের বিষয়টি নির্ধারণ করা হয়েছে মোবাইল ফোন আমাদের জন্য আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ সঙ্গত কারণে আমি এর পক্ষে অবস্থান করছি।
বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ। বিদেশের হাজার মাইল দূরত্বকে সেকেন্ড অতিক্রম করে দূরত্বকে জয় করেছে এক যুগান্তকারী উদ্ভাবন যার নাম মোবাইল ফোন। ১৯৭৩ সালে আমেরিকার ইঞ্জিনিয়ার ‘মার্টিন কুপার’ মোবাইল ফোন তৈরি করেছিলেন।
মোবাইল ফোনের জনক ‘মার্টিন কুপার’ তখনও জানতেন না যে, এই মোবাইল ফোনে একদিন হবে বিশ্বে যোগাযোগের অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম এবং সুযোগ-সুবিধা এবং অ্যাপ্লিকেশন সমূহ এত বৃহৎ আকারে মানুষকে সহায়তা করবে।
ফোনগুলোতে উন্নত মানের অ্যাপ্লিকেশন সমূহ আমাদের জীবনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে কাজে লাগছে এবং আমাদের জীবনকে আরো সহজ করে তুলেছে। এক যুগ আগেও মোবাইল ফোন এতটা সহজলভ্য ছিল না।
অন্যদিকে যারা দেশে-বিদেশে চিঠির মাধ্যমে তথ্য আদান প্রদান করত তারা তারা সহজেই উপলব্ধি করতে পারে মোবাইল ফোন তাদের পরিশ্রম কষ্ট কতটা লাঘব করেছে এবং সময়কে সাশ্রয় করেছে। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা মোবাইল ফোনকে তাদের ছোটবেলা থেকেই দেখে আসে তার ফলে তাদের কাছে এর উপকারিতা তেমন ভাবে ধরা দেয় না।
আমরা জানি মোবাইল মোবাইল ফোন আমাদের যোগাযোগের জন্য খুবই প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে এটি যোগাযোগ পাশাপাশি বিনোদনের মাধ্যম এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করতে ব্যবহৃত হচ্ছে।
আরো পড়ুন: মোবাইল ফোন ব্যবহার এর সুফল ও কুফল, ভালো /মন্দ
মোবাইল ফোন যেন অনেকগুলো ডিভাইসকে একটি ডিভাইসের রূপান্তরিত করছে - মোবাইল ফোনের উপকারিতা গুলো হল:
- যেমন আমাদের যদি ক্যালকুলেটর এর প্রয়োজন হয় তাহলে আমাদেরকে ক্যালকুলেটর কিন্তু ফোনেই থাকে। আর ফোন ব্যবহার করেই সহজেই হিসাব নিকাশ করে ফেলতে পারি।
- অনুরূপভাবে রেডিও ফোনে থাকে। ক্যামেরা দিয়ে আমরা ছবি তুলি কিন্তু ক্যামেরাটাও মোবাইলের মধ্যে রয়েছে। আমরা ক্যামেরা দিয়ে অনেক সময় ভিডিও করি সেটাও ভিডিও রেকর্ডার হিসেবে ফোনেই থাকে।
- ইন্টারনেট ইউজ করার জন্য যে কম্পিউটার থাকতে হবে তা নয়। ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ইউজ করা যায়।
- দিন তারিখ জানার জন্য ক্যালেন্ডারের থাকার প্রয়োজন নেই, একটি ফোন থাকলেই হয়।
- সময় জানার জন্য ঘড়ির প্রয়োজন নাই। ফোন থাকলেই হয়। এলার্ম এর কাজটাও কিন্তু ফোনই করে।
- আপনার আত্মীয়-স্বজন বা পরিবার-পরিজন পৃথিবী যে প্রান্তেই থাক না কেন, সে কি করছে, কেমন আছে তার সকল খোঁজ খবর সেকেন্ডের মধ্যেই জানা সম্ভব।
- ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য অনলাইনে দাঁড়িয়ে থাকার প্রয়োজন নেই বাড়িতে বসেই মোবাইলের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট কাটা যায়।
- কোন স্কুল কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য ফরম পূরণের কাজে সরাসরি যাওয়ার প্রয়োজন নাই। ফোনেই কাজ হয়। অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে মানুষ প্রতিনিয়ত জীবনকে আরামদায়ক করে চলছে।
- যে কোন চাকরির আবেদন আমরা ঘরে বসেই করতে পারছি।
- ভূমি উন্নয়ন সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ আমরা বাড়িতে বসে করতে পারি।
- ট্যাক্স কিংবা ভ্যাট বাড়িতে বসেই দেওয়া যায়।
- বিদ্যুৎ বিল ফোনের মাধ্যমে দেওয়া যাচ্ছে।
- বাচ্চার জন্মনিবন্ধন কার্ড বা প্রাপ্ত বয়স্কদের ভোটার আইডি কার্ড, অথবা বিদেশে যাওয়ার পাসপোর্ট ভিসা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাড়িতে বসে করা যায়।
- বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু হওয়ায় ব্যাংকের কাজ মোবাইলের মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে। কাউকে টাকা দিতে হলে তার কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নাই বা টাকা গ্রহণকারী ব্যাক্তিরও আসার প্রয়োজন নাই বাড়িতে বসে বিকাশ বা নগদ, রকেট মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে টাকা আদান-প্রদান করা যায়।
এত উপকারিতা সত্ত্বেও বিপক্ষে দল কিভাবে বলে যে মোবাইল ফোন আমাদের জন্য অভিশাপ?
দ্বিতীয় বক্তা
মোবাইল ফোন বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার উপকারিতা স্বাক্ষর রেখেছে শিক্ষা ক্ষেত্রেও উপকার করছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের বহুবিধ ব্যবহার লক্ষণীয়।
- যেমন বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ, শিক্ষামূলক কনটেন্ট, বিভিন্ন ভাষা শিক্ষা বা ট্রান্সলেশন করা ইত্যাদি
- এছাড়া স্মার্ট ফোন শিক্ষা ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের ইন্টারনেট ব্রাউজিং সহ বিভিন্ন শিক্ষামূলক কাজে সাহায্য করে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেটের বিশাল তথ্যভাণ্ডার থেকে জ্ঞান অর্জন করছে যা ইলার্নিং হিসেবে পরিচিত।
- তাছাড়া “প্লে স্টোর” থেকে বিভিন্ন অ্যাপ ডাউনলোডের মাধ্যমে বাড়তি অনুশীলন করা সম্ভব হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের অনলাইন ক্লাস অনলাইন কোর্স করতে পারছে। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের শিক্ষামূলক কনটেন্ট দেখতেও পাচ্ছে। স্বল্প মূল্যে বা বিনামূল্যে শত শত শিক্ষামূলক ভিডিও থাকায় পড়াশোনার খরচ অনেক কমে গেছে এবং পৃথিবীর যে কোন স্থান থেকে বাড়িতে বসেই অনেক ভালো মানের শিক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে।
- অনেক অনুপ্রেরণামূলক ভিডিও দেখার মাধ্যমে অনেকে অনুপ্রাণিত হয়ে জীবনে এগিয়ে যাচ্ছে।
- ছাত্রছাত্রীরা অনলাইনে বিভিন্ন দেশের ভাষা শিখতে পারছে এবং ভাষা অনুবাদ করতে সক্ষম হচ্ছে।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের উপকারিতা
চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে মোবাইল ফোন ব্যবহৃত হয়। চিকিৎসকরা ফোনের মাধ্যমে চিকিৎসা দিয়ে থাকে।
কোন রোগের লক্ষণ লিখে ফোনে সার্চ দিলে সে রোগ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা লাভ করা সম্ভব।
আজকাল মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপরাধীদের দ্রুত ধরা সম্ভব। যেমন অপরাধীদের ফোনের নাম্বার ট্র্যাক করে লোকেশন জানার মাধ্যমে সহজেই অপরাধী ধরা সম্ভব হচ্ছে।
মোবাইল ফোনে জিপিএস সিস্টেম থাকে যার ফলে আমরা ম্যাপ দেখে সহজেই নিজের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারি।
আমরা শুধুমাত্র মোবাইল ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছি তা না। মোবাইল ফোনের নতুন নতুন ভার্সন তৈরি হচ্ছে এবং নিত্য নতুন ধরনের মোবাইল ফোন তৈরি হচ্ছে। যার ফলে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে। বিভিন্ন দেশ মোবাইল ফোন তৈরি এবং তা বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
৩য় বক্তা: মোবাইল ফোনের উপকারিতা পক্ষে গোছানো আলোচনা
২০২৪ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী পৃথিবীতে ৭.৪১ বিলিয়ন মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে এ থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, মোবাইল ফোনের গুরুত্ব কতটা এবং মানুষ এটাকে আশীর্বাদ হিসেবে নিচ্ছে যার কারণে এত বিপুলসংখ্যক মানুষ ফোন ব্যবহার করছে।
দিনের আলো এবং রাতের আঁধার এ দুটোর মধ্যে যদি আমরা শুধু রাতের আঁধারকে বড় করে দেখি তাহলে দিনের আলো উপভোগ তথা জীবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা সম্ভব হবে না। তাই আমরা মোবাইল ফোনের উপকারিতার থেকে যদি অপকারিতার দিক থেকে বড় করে দেখি তাহলে আমাদের মোবাইল ফোনের ব্যবহার করা সম্ভব হবে না। যার ফলে আমাদের জীবন আরো কষ্টকর হয়ে পড়বে এবং জীবনের স্বাভাবিক উন্নতি ব্যাহত হবে।
মোবাইল ফোন যোগাযোগকে অনেক উন্নত করেছে। একটি বোতামের চাপে আমরা পুরো বিশ্ব জুড়ে প্রিয়জনের সাথে যোগাযোগ করতে পারি। মোবাইল ফোন পরিবার পরিজনের যোগাযোগ ব্যবস্থা, বাণিজ্যের যোগাযোগ, সব ক্ষেত্রেই দূরত্বের বেড়াজালকে অতিক্রম করেছে।
মোবাইল ফোন আমাদের হাতের কাছে প্রচুর জ্ঞান ও তথ্য সরবরাহ করছে। স্মার্ট ফোনে ইন্টারনেট এক্সেস দ্বারা প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে জ্ঞান অর্জনের এক দিগন্ত প্রসারিত হয়েছে।
হ্যাঁ, মোবাইল ফোন ব্যবহারের সাথে চ্যালেঞ্জ জড়িত রয়েছে, কিন্তু আমরা অবশ্যই নেতিবাচক দিকগুলিকে অসংখ্য ইতিবাচক দিকগুলিকে ছাপিয়ে যেতে দেব না।
মোবাইল ফোন ব্যবহারের প্রতি দায়িত্বশীল হয়ে এবং ব্যবহারের জন্য যে সকল সম্ভাব্য ঝুঁকি রয়েছে তা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে এবং প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আমরা তথ্যপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ তৈরিতে মোবাইল ফোনকে কার্যকর ভাবে ব্যবহার করতে পারি এবং নেতিবাচক পরিণতি গুলোকে অনেকাংশেই কমাতে পারি।
প্রতিপক্ষ বন্ধুরা আপনারা আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গের পরিবর্তন করেন এবং আমাদের সাথে সুরে সুর মিলিয়ে বলুন যে, মোবাইল ফোন মানুষের জন্য জন্য আশীর্বাদে বয়ে আনে।
আরো পড়ুন: মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায়
বিপক্ষ দল
মোবাইল ফোনের সুবিধা গুলো জানার পরে আর্টিকেলের এই অংশে আমরা বিপক্ষ দলের জন্য কিছু আলোচনা তুলে ধরবো।
প্রথম বক্তা (সম্বোধনী সংলাপ)
আমার সামনে উপস্থিত বিজ্ঞ বিচারক মন্ডলী, আমার সহপাঠী এবং দর্শকদের জানাই আমার পক্ষ থেকে একান্ত শুভেচ্ছা ও সালাম। আসসালামু আলাইকুম। আজকের বিতর্কের বিষয়টি, নির্ধারণ করা হয়েছে মোবাইল ফোন আমাদের জন্য আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ সঙ্গত কারণে আমি এর বিপক্ষে অবস্থান করছি।
মোবাইল টাউয়ারের Radiation
কি পরিমান ক্ষতি,
ব্রেন টিউমার, নিদ্রাহীনতা,
আজ মানুষের দুর্গতি৷
মোবাইল ফোন যদি আমাদের উপকারী করবে তবে কেন আজ হাজার হাজার শিশু, তরুণ-তরুণী মোবাইল ফোনে আসক্ত; পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এবং ভবিষ্যৎ অন্ধকারের পথে ধাবিত?
মোবাইল ফোন যদি আমাদের আশির্বাদ তবে কেন পদে পদে আমাদের প্রতারিত হয় হতে হয়? কখনো বিকাশের টাকা চুরি যায়। কখনো বা অনলাইনে কিনতে গিয়ে টাকা দিয়ে প্রতারনার শিকার হতে হয়। কখনো আবার প্রতারকের ফাদ পা দিয়ে টাকা হারাতে হয়।
মোবাইল ফোন যদি উপকারী করে তবে কেন স্কুল কলেজে বিভিন্ন বিতর্কের বিষয় হিসেবে মোবাইল ফোন তরুণ সমাজের আসক্তির মূল এই শিরোনামে বিতর্কের আয়োজন করা হয়? প্রশ্ন রয়ে গেল পক্ষদলীয় সহপাঠীদের কাছে।
আজকাল মোবাইল ফোন বা ব্যবহারের পরে অহরহ বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগ দেখা দিচ্ছে। মোবাইল ফোন থেকে নির্গত বিভিন্ন ধরনের রেডিয়েশন আমাদের শরীরের মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করছে।তাহলে এটা কোন ধরনের আশির্বাদ? প্রশ্ন রয়ে গেল পক্ষদলীয় বন্ধুদের কাছে।
আপনারা কোন উপকারের কথা বলছেন? যে উপকারের ফলে মানুষকে প্রতারিত হয়, নাকি যে উপকারের ফলে আসক্তিগত শিশু কিশোর অন্ধকারে ডুবে যায়।অথবা যে উপকারের ফলে মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হতে হয়। নাকি সেই উপকার যে উপকারের ফলে আসক্তি মানুষের জীবন ব্যাহত করে।
মোবাইল ফোন শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে শিক্ষার্থীরা আসক্তিতে ভুগছে। ছোট ছোট বাচ্চারা আজকাল চোখের সমস্যা মাথার সমস্যা ভোগে।
শিক্ষার্থীরা পড়ার জন্য মূল্যবান সময়গুলোকে ফোনে অযথা অপচয় করে চলেছে।
২য় বক্তা:
টিকটক আর মোবাইল গেমে
আসক্ত আজ কিশোর সমাজ
লেখাপড়া লাটে তুলে
এটাই তাদের আসল কাজ।
ফেইজবুক আর হোয়াটঅ্যাপে
চুকিয়ে সবাই করছে প্রেম
সুখের সংসার দূরে ফেলে
দুঃখ নিয়ে খেলছে গেম।
এ যখন আমাদের প্রেক্ষাপট তখন আমরা কি করে বলতে পারি মোবাইল ফোন আমাদের উপকারে আসছে? মোবাইল ফোনের চরম অপকারিতা আমাদের জীবনে অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
- মোবাইল ফোন ব্যবহার করার মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে যা মানুষের উপকার নয় অপকার করে।
- মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে মানুষের বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। যেমন দৃষ্টি শক্তি কমে যাচ্ছে মাথা ব্যথা করছে। মোবাইল ফোনের স্কিন হতে নির্গত নীল রশি শরীরের মেলাটোনিন উৎপাদন ব্যাহত করে। মেলাটোনিন হলো এক ধরনের হরমোন যা আমাদের ঘুম নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে আমাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে।
- আজকাল মোবাইল ফোনে বন্ধু বান্ধবের সাথে কথা বলা মানে messenger, whatsapp বা ইমোতে চ্যাট করা যার মাধ্যমে অনেক সময় অপচয় হয়।
সম্মানিত বিচারক বিরোধী দলীয় সহপাঠী এবং বিচারকগণ আমি মোবাইল ফোনের নেতিবাচক বিস্তারের বিরুদ্ধে আমাদের অটল অবস্থানে রয়েছি। মোবাইল ফোন আমাদের কিছু উপকার করা সত্ত্বেও মারাত্মকভাবে আমাদের মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্য ক্ষতির করছে। সামাজিক সুস্থতার উপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করছে।
ব্যক্তির পারস্পারিক সম্পর্ক মানসিক স্বাস্থ্য এবং জীবনের সামগ্রিক মানের উপর মোবাইল ফোনের যে নেতিবাচক প্রভাবটা তা কখনোই উপেক্ষা করা যাবে না।
৩য় বক্তা:
সাইবার অপরাধ, ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্য চুরি ব্যাপক উদ্যোগ সৃষ্টি করেছে। যা জরুরিভাবে সমাধান করা একান্ত প্রয়োজন।
মোবাইল ফোনের প্রতি আসক্তি আমাদের একাডেমি ফলাফলের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
World Health Association জানিয়েছে, মোবাইল ফোন ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন ছড়ায়, যা কয়েক ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
মোবাইল ফোন শারীরিক স্বাস্থ্য, মানসিক সুস্থতা, সম্পর্ক, উৎপাদনশীলতা এবং এমনকি পরিবেশকে মারাত্নকভাবে প্রভাবিত করে।
প্রতিপক্ষ দলীয় বন্ধুরা আপনারা আপনাদের চিন্তাধারা এবং চেতনা পরিবর্তন করুন এবং আমাদের সাথে এক সুরে বলে উঠুন মোবাইল ফোন বর্তমানে মানবজাতির জন্য হুমকি এবং এটা মানবজাতির জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
বিঃদ্রঃ:
১। এই বিতর্ক প্রতিযোগিতায় আপনি আপনার নিজস্ব যুক্তি এবং উদাহরণ ব্যবহার করতে পারেন।
২। আপনার বক্তব্য যেন স্পষ্ট, সংক্ষিপ্ত এবং যুক্তিপূর্ণ হয়।
৩। আপনার প্রতিপক্ষের যুক্তির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।