ফ্রান্সের নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়, ফ্রান্সে বৈধ হওয়ার উপায়: ফ্রান্সকে বলা হয় মানবাধিকারের দেশ। ফ্রান্সে বৈধভাবে থাকতে গেলে অবশ্যই ফ্রান্সের নাগরিকত্ব পেতে হবে। যেটাকে আমরা অনেকেই কার্ড পাওয়া বলি। এই কার্ডটা পাওয়ার বেশ কয়েকটি উপায় আছে। ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় ফ্রান্সের নাগরিকত্ব পাওয়া বা বৈধ হওয়ার হার অনেক বেশি।
এদেশে কারো কার্ড না থাকলে অর্থাৎ গ্রীন কার্ড না থাকলে, কাউকে কখনো ঘাড় ধরে বের করে দেয়া হয় না। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে বৈধ হওয়ার সুযোগ থাকে। তো সেই সুযোগ গুলো এবং উপায় গুলি নিয়েই আপনাদের সাথে আলোচনা করব। ফ্রান্সের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য ফ্রান্সে বৈধ হওয়ার উপায় সমূহ জানতে হবে। এই আর্টিকেলটিতে ফ্রান্সে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায় গুলো বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
আজকের এই পোষ্টে আমরা ফ্রান্সে নাগরিকত্ব পেতে কত বছর লাগে, ফ্রান্সে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়, ফ্রান্সে কোন কাজের চাহিদা বেশি, ফ্রান্সে যেতে কত টাকা লাগে, ফ্রান্সে যেতে কি কি লাগে সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরবো। ফ্রান্সের নাগরিকত্ব সম্পর্কে জানতে লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
(toc) #title=(এক নজরে সম্পূর্ণ লেখা পড়ুন)
ফ্রান্সে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়
- কেস করা বা এসাইলাম এর মাধ্যমে ফ্রান্সে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়
- দীর্ঘদিনের অসুখ দেখিয়ে চিকিৎসা সুবিধা পেতে ফ্রান্সে বৈধ হওয়ার উপায়
- সেলারি কার্ড দিয়ে ফ্রান্সে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়
- ১০ বছর বসবাস করে ফ্রান্সে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়
- বাচ্চাদের পড়াশোনার সুবাদে ফ্রান্সে বৈধ হওয়ার উপায়
- ফ্রান্সের নাগরিক বিয়ে করে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়
- ইনভেস্ট করে ফ্রান্সে নাগরিকত্ব পাওয়া যায়
- স্টুডেন্টশীপ দিয়ে ফ্রান্সে নাগরিকত্ব পাওয়া যায়
- স্পেশাল ট্যালেন্ট দেখিয়ে ফ্রান্সে নাগরিকত্ব পাওয়া যায়
১। কেস করা বা এসাইলাম এর মাধ্যমে ফ্রান্সে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়
ফ্রান্সে আসার পর প্রথমত যে কাজটি করতে হয় সেটা হলো একটা কেস করতে হয়। আমরা যেটাকে বলি এসাইলাম। এটাকে অনেকেই পলিটিক্যাল এসাইলাম ও বলে। আপনি ফ্রান্সে বৈধভাবে থাকার জন্য এই দেশের সরকারের কাছে যে প্রোটেকশন চাচ্ছেন সেটিই মূলত এসাইলাম।
এই কেসের মাধ্যমে আপনাকে প্রমাণ করতে হবে যে, আপনার নিজের দেশে আপনি নিরাপদ না। আপনি জীবনের হুমকির সম্মুখীন এর কারণে দেশ ছেড়ে আপনি ফ্রান্সে এসেছেন। এই হুমকির সম্মুখীন যে আপনি বলছেন, এটার যাবতীয় প্রমাণাদি আপনাকে শো করতে হবে।
এর প্রেক্ষিতে এখানে, মানে রাষ্ট্রের কাছে আপনাকে একটা আবেদন করতে হবে। আবেদন করার পরবর্তী সময়ে আপনার ভাইভার ব্যবস্থা করবে। এবং তারপর যদি আপনাকে অথরিটি বিশ্বাস করেন তাহলে আপনাকে কেসের রায় দিবে এবং আপনি ১০ বছরের কার্ড পেয়ে যাবেন। এটাকে বলে রিফিউজি স্ট্যাটাস। আর এই রিফিউজি স্ট্যাটাসের অনেক সুবিধা। আপনার যখন কাজ থাকবে না, তখন আপনার থাকা, খাওয়া, চিকিৎসা সব ধরনের সুযোগ সুবিধা আপনি একদম ফ্রি পাবেন। কেসের রায় আপনার পজেটিভ হলেই আপনি রিফিউজি স্ট্যাটাস পাবেন।
এছাড়া যদি কেসের রায় এমন হয় যে, অর্থাৎ আপনার উল্লেখ করা তথ্য ভুল আছে বা রাষ্ট্র আপনাকে পুরোপুরি বিশ্বাস না করে। তবে রাষ্ট্র আপনাকে একেবারেও রিজেক্ট করে দিবে না। এমন অবস্থায় আপনাকে এমন একটা কার্ড দেওয়া হবে যেটা ১ বছর, ২ বছর অথবা ৩ বছর মেয়াদি এরকম। এই কার্ডকে বলা হয় সাবসিডিয়ারি। তবে এই কার্ড পেলে অর্থাৎ এই স্ট্যাটাস পেলে রিফিউজি স্ট্যাটাসের মতো সুযোগ সুবিধাগুলি পাওয়া যাবে না।
উভয় ক্ষেত্রে যদি আপনি রিজেক্ট যান তবে সেক্ষেত্রে আপনি কিন্ত ফ্রান্সে অবৈধ হয়ে যাবেন। আর এই অবৈধ অবস্থায় আপনি ফ্রান্সে আবেদন করতে পারবেন তবে তা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। বৈধতা পাওয়ার জন্য আপনাকে কমপক্ষে ৩ বছর পর আবার পুনরায় আবেদন করতে হবে।
আরো পড়ুন: ইউরোপ মহাদেশের দেশগুলোর নাম
২। দীর্ঘ দিনের অসুখ
মালাদী কাগজ কেস করে যখন রিজেক্ট হয়। তখন আবার আবেদন করার সুযোগ থাকে। সেটা হলো নিজেকে দীর্ঘদিনের অসুখ দেখিয়ে আবেদন করে যে, আপনার দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা করতে হবে। সে জন্য তাকে এদেশে থাকতে হবে।
এই ধরনের একটা আবেদন করতে হয়। এটা যদি অথরিটি মেনে নেয় বিশ্বাস করে তাহলে তাকে এই কার্ড দেয়া হয়। কারণ কিছু কিছু অসুখ আছে যেগুলা এখানে খুব গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়। ওই অসুখগুলির ভীতিতে আপনাকে এই মালাদী কাগজ দেবে। এছাড়া অনেকে চিকিৎসা করতে আসার পরেও এই আবেদনটা করতে পারেন।
৩। কাজের মাধ্যমে বা সেলারি কার্ড
আসলে সেলারি কার্ড বলতে কাজের মাধ্যমে যেভাবে ফ্রান্সে বৈধ হওয়া যায়। যখন কেউ এখানে কেস করেও রিজেক্ট হয়ে যায় অর্থাৎ কার্ড পায় না। যদি কার্ড না থাকে তাহলে ও কিন্তু এখান থেকে বের করে দেওয়া হয় না।
তো যদি কারো কাগজ না থাকে তারপরেও সে যদি এখানে লিগেল কাজ করে। তাহলে কিন্তু ওই কাজের পেমেন্টের যে একটা পেপার থাকে অর্থাৎ কাজের মালিক প্রতিমাসে তাকে একটা মানি পেমেন্টের জন্য পেপার দিয়ে থাকে ওই পেপার গুলি সাবমিট করে কিন্তু বৈধ হওয়ার একটা উপায় আছে।
৩ বছর থাকার পরে, প্রতি মাসের সেলারি পেপার মালিকের কাছ থেকে নিয়ে চব্বিশটা জমা করে একসাথে সাবমিট করলে বৈধ হওয়ার একটা উপায় থাকে। আর যদি ৫ বছর হয়ে যায় সেক্ষেত্রে আটটা পেপার জমা দিতে হয়। তবে এই ক্ষেত্রে কাজের মালিকের সাথে খুবই সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হয়। কারণ কাজের মালিকের সহযোগিতার প্রয়োজন হয়।
৪। ১০ বছর বসবাস করার পর ফ্রান্সে নাগরিকত্ব পাওয়া যায়
এখানে কেস যদি রিজেক্ট ও হয়ে যায় তারপরও অনেকে এখানে বসবাস করেন। এখানে বসবাস করতে করতে যখন একটানা ১০ বছর যাবত বসবাস করা হয়। তখন তিনি আবার আবেদন করতে পারেন বৈধ হওয়ার জন্য।
তবে সেক্ষেত্রে যিনি আবেদন করবেন তার ফ্রান্সে বসবাসের প্রমাণ দেখাতে হবে। একটানা ১০ বছর যে উনি বসবাস করছেন তার প্রমাণ দেখাতে হবে। সে প্রমাণ হিসেবে দেখাতে পারেন- এখানে চিকিৎসা করেছেন বা যেখানে যে বাসায় থাকছেন তার বাসার মালিকের ডকুমেন্ট দেখাতে পারেন। কিংবা ট্রান্সপোর্ট টিকিট দেখাতে পারেন বা এই ধরনের যেকোনো প্রমাণাদি। দেখাতে হবে যে এখানে ১০ বছর উনি বসবাস করছেন। তবে প্রথমে যে কেস করেছিলেন সেটা রিজেক্ট হওয়ার পরেও রিআপিল কিন্তু চালিয়ে যেতে হয়।
আরো পড়ুন: ইউরোপের ২৬ টি দেশের নাম
৫। বাচ্চাদের পড়াশোনার সুবাদে ফ্রান্সে নাগরিকত্ব পাওয়া যায়
যাদের কার্ড নেই অর্থাৎ পেপার নেই বা গ্রীন কার্ড নেই। তাদের বাচ্চা যদি স্কুলে পড়াশোনা করে তাহলে ৩ বছর পড়াশোনা করার পর ওই ফ্যামিলি বৈধ হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারে। এখানে আরেকটা কথা বলে রাখি যদিও এখানে কারোর কার্ড নেই বা পেপার নেই তারপরেও কিন্তু তাদের বাচ্চারা পড়াশোনা করতে পারে একেবারে ফ্রি। সেই কার্ড যাদের আছে তাদের মতই ফ্রি পড়াশোনা করার সুযোগ পায়।
৬। ফ্রান্সের নাগরিক বিয়ে করে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়
ফ্রান্সে বিয়ে করে বৈধ হওয়া যায়। কোন কার্ড ধারিকে বিয়ে করে বৈধ হওয়ার একটা সিস্টেম আছে।
৭। ইনভেস্ট করে ফ্রান্সে নাগরিকত্ব পাওয়া যায়
এখানে বড় অংকের একটা এমাউন্ট ইনভেস্ট করলে এর মাধ্যমেও বৈধ হওয়া যায়। যেমন কোন বিজনেসে বা কোন বাড়ি কিনে যদি আপনি ইনভেস্ট করেন। সেক্ষেত্রে মিনিমাম ৪০০০০ ইউরো ইনভেস্ট করতে হয়। এভাবে ইনভেস্ট করার মাধ্যমে বৈধ হওয়ার একটা সুযোগ আছে।
৮। স্টুডেন্টশীপ
অনেকেই আছেন ইউরোপের বিভিন্ন কান্ট্রিতে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে আসেন। আর সেখান থেকে তারা ফ্রান্সে চলে আসেন। আপনারা যদি ফ্রান্সে এসে ফ্রান্সের কোনো কলেজে অথবা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে যান। আর সেখানে আপনাদের এডুকেশন কমপ্লিট করেন তাহলে আপনারা অটোমেটিক্যালি এদেশে বৈধ হয়ে যাবেন। আমার কাছে বৈধ হওয়ার এটা সবচেয়ে সহজ উপায় বলে মনে হয়।
৯। স্পেশাল ট্যালেন্ট দেখিয়ে ফ্রান্সে নাগরিকত্ব পাওয়া যায়
যে কারোরই যদি কোন স্পেশাল ট্যালেন্ট থেকে থাকে সেটা যদি এখানে দেখানো যায়। যেমন- একটা উদাহরণ হিসেবে দেখাতে পারি, বাংলাদেশেরই একটা ছেলে নাম ফাহিম। ফাহিম এখানে জাতীয় পর্যায়ের দাবা খেলায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে সে কার্ড পেয়েছে। শুধু সে না বরং তার পুরো ফ্যামিলি ফ্রান্সের নাগরিকত্ব কার্ড পেয়েছে। তো এরকম এরকম স্পেশাল ট্যালেন্ট যদি কারো থাকে তার মাধ্যমে কিন্তু বৈধ হওয়ার একটা সুযোগ থাকে।
ফ্রান্সে যেতে কত টাকা লাগে
বাংলাদেশ থেকে ফ্রান্সে যেতে কত টাকা লাগবে এটা নির্ভর করবে আপনি কোন ভিসা নিয়ে যাচ্ছেন তার উপর। আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যান তাহলে আপনাকে ১৫ থেকে ১৮ লক্ষ টাকা লাগবে।আর আপনি যদি পড়াশুনার উদ্দেশ্যে অর্থাৎ উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে যান তাহলে আপনাকে ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা লাগবে।
ফ্রান্সের সুযোগ সুবিধা
যেহেতু মানবাধিকারের দেশ বলা হয় ফ্রান্সকে তাই ফ্রান্সের অনেক অনেক সুযোগ সুবিধা থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ফ্রান্সের সুযোগ সুবিধা গুলো উল্লেখ করা হলো:
- চিকিৎসা সুবিধা
- শিক্ষা সুবিধা
- বেকার ভাতা
- ঋণ ব্যবস্থা
- ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক সুযোগ সুবিধা
চিকিৎসা সুবিধা
ফ্রান্সের চিকিৎসা সুবিধা অনেক অনেক উন্নত। অর্থাৎ ফ্রান্সে চিকিৎসার মান অনেক ভালো। আবার চিকিৎসার ব্যয়ভার খরচ কোনো কোনো ক্ষেত্রে একেবারে ফ্রি বলা চলে। অর্থাৎ এখানে একজন মানুষ যখন অসুস্থ হবে তার চিকিৎসা আগে করবে। ইনকাম আছে কি নেই এটা প্রধান বিষয় না। যার যতটুকু চিকিৎসার প্রয়োজন তাকে ঠিক ততটুকু চিকিৎসা দেওয়া হবে। একেবারে যদি ইনকাম নাও থাকে তাহলেও সে ফ্রিতে চিকিৎসা পাচ্ছে। চিকিৎসা সেবা কিন্তু সকলের জন্য সমান।
যার অনেক বেশি ইনকাম আছে ঠিক তার মতোই। আর কার কত ইনকাম আছে সেটা দিয়ে কোনো প্রভাব পড়ে না। চিকিৎসারও পরেও যার যেমন চিকিৎসা প্রয়োজন ঠিক তেমন চিকিৎসাই করা হয়। এখানে যারা বসবাস করে তাদের ইনকাম আছে কি নেই সেটা বড় কথা না। সে একজন মানুষ তার জন্য চিকিৎসা প্রয়োজন সে চিকিৎসা পাবে।
শিক্ষা সুবিধা
এখানে প্রাইভেট এবং পাবলিক ২ ধারার স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি আছে। তবে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী পাবলিক স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করে। কারণ হলো এখানে শিক্ষার মান অনেক অনেক ভালো। সেজন্যই পাবলিক স্কুল কলেজে অনেকেই পড়াশোনা করে। আর পড়াশোনা করার ক্ষেত্রে ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত একেবারে ফ্রিতে পড়াশোনা করানো হয়। কোনো ধরনের টিউশন ফি কিন্তু লাগে না বরং গভমেন্ট থেকে আরো কিছু আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকে শিক্ষার্থীরা।
আবার কিছু কিছু আর্থিক সহায়তা আছে, সেটা মা বাবার ইনকামের উপরে নির্ভর করে। ইনকাম কম হলে সহায়তা একটু বেশি পায়। এখানে শিক্ষার মান যেমন ভালো তেমনি আবার শিক্ষার খরচ একেবারে নেই বললেই চলে। কারণ ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত তো কোনো খরচ লাগলো না একেবারেই ফ্রি। আর যখন ইউনিভার্সিটিতে যাবে তখন একেবারে সামান্য একটা টিউশন ফি লাগে।
আরেকটা মজার বিষয় হলো, আমরা বাংলাদেশে কিন্তু একটা স্লোগান শুনে আসছি সবসময় সেটা হলো- “ছেলে হোক মেয়ে হোক দুটি সন্তানই যথেষ্ট” এখানে কিন্তু তা না। এখানে সন্তানদেরকে দেশের সম্পদ হিসেবে দেখা হয়। তাই এখানে সন্তান যত বেশি হবে গভমেন্ট তত বেশি সুযোগ সুবিধা দেবে সেই ফ্যামিলিকে।
প্রথমত একটা মা যখন প্রেগন্যান্ট হবে তাকে একটা অর্থনৈতিক একটা সহায়তা করা হয়। বাচ্চা হওয়ার পরেও প্রতি মাসে একটা এমাউন্ট পেয়ে থাকে ৩ বছর পর্যন্ত প্রতি মাসে মাসে। এই বাচ্চাটার জন্য একটা আর্থিক সহযোগিতা করে থাকে গভমেন্ট। এছাড়াও যাদের সন্তান বেশি থাকে কিন্তু ইনকাম কম থাকে সেক্ষেত্রে অনেক ধরনের সুবিধা ওই ফ্যামিলি টা পেয়ে থাকে।
বেকার ভাতা
এখানে যখন কারো ইনকাম থাকে না তাকে তার ফ্যামিলির মেম্বার অনুযায়ী একটা হিসাব করে তাকে একটা ভাতা দেওয়া হয়। এটা বেকার ভাতা। যতদিন না সে একটা কাজ খুঁজে পাচ্ছে। এছাড়াও কাজ চলে গেলে বা কাজ ছেড়ে দিলে এইক্ষেত্রে ও একটা আর্থিক সহায়তা পায়।
যেমন ধরেন একজন কাজ করছিলেন তারপর তার কাজটা বন্ধ হয়ে গেছে। যেকোনো কারণেই হোক। তার নিজের কারণে হোক বা তার প্রতিষ্ঠানের কারণেই হোক। তার কাজটা এই মুহূর্তে নেই। সে যতদিন কাজ করেছে সেই কাজ অনুপাতে কিন্তু তার একটা হিসাব হবে।
সেই কাজের সময় অনুযায়ী পরবর্তী সময়টাকে ওই বেতনেরই একটা পার্সেন্টেন্স হিসাবে তাকে কিন্তু প্রতিমাসে টাকা দেওয়া হবে। অনেকটা সেলারির কাছাকাছি। এটা যতদিন কাজ করেছে সেটা সাথে ক্যালকুলেশন হবে যে কতদিন পাবে।
ওই টাকাটা যখন শেষ হয়ে যাবে তখনও যদি তার কোন কাজ না হয়। তখন কিন্তু সে একেবারেই বেকার। আর তার পরবর্তীতে ওই পিরিয়ডের বাইরে যখন সে কাজ খুঁজে পাবে না। তখন তাকে একটা ভাতা দেওয়া হবে সেটা হল বেকার ভাতা। যতদিন কাজ না পায় ততদিন পর্যন্ত গভমেন্ট কিন্তু সাপোর্ট করে।
ঋণ ব্যবস্থা
এখানে যারা জব করেন তাদের জন্য খুব ভালো একটা ঋণ ব্যবস্থা আছে। জবের মাধ্যমে বাড়ি কেনার জন্য লোন পাওয়া যায়। আবার কোন বিজনেস করার জন্যও কিন্তু লোন পেতে পারেন। এখানে পাবলিক ট্রান্সপোর্টের সুবিধাটা অনেক বেশি। ইনকামের উপর নির্ভর করে ধার্য করা হয় কে কি রকমের টাকা দিবে। যার এক্কেবারে ইনকাম নেই সে কিন্তু একেবারে ফ্রি পাবে।
আসলে এই দেশে একজন মানুষকে স্বাবলম্বী করার জন্য স্বাভাবিক ভাবে সহযোগিতা করা হয়। আমাদের দেশে আমরা একটা কথা বলে আসছি যে চাকরি খুঁজতে খুঁজতে স্যান্ডেলের তলা শেষ হয়ে যায়। আসলেই কথাটা কিন্তু বাস্তব সত্য।
যে একটা জবের জন্য যেভাবে দৌড়াতে হয় একেবারে ফটোকপি থেকে শুরু করে যাতায়াত খরচ সবকিছু চিন্তা করলে আসলে অনেক অনেক খরচ পড়ে যায়। কিন্তু এখানে বিষয়টা এরকম না। যে কারোর জবের জন্য সে যদি কোন ধরনের ফটোকপি করবে বা মেইল করবে বা তার যাতায়াত করতে হবে সব ধরনের ব্যবস্থাই কিন্তু এখানে করা আছে একেবারেই ফ্রিতে।
এছাড়াও আরেকটা বড় বিষয় আছে সেটা হলো অভিজ্ঞতা ছাড়া তো কোথাও জব হয় না। এখানেও তাই কিন্তু সেক্ষেত্রে এখানে যেটা করা হয় সেটা হলো যে জব করতে চাচ্ছে, সেই জবের একটা প্রশিক্ষণ করানো হয়।
সেই প্রশিক্ষণ চলাকালে তো কোনো সেলারি পাওয়া যায় না। তবে তখন একটা আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকে। কারণ ওই মুহূর্তে তার যেহেতু কোনো টাকা আয়ের উপায় নেই। এজন্য এই আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকে। এভাবে প্রশিক্ষণের কারণে সে খুব দ্রুতই একটি জবে জয়েন করতে পারে।
ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক সুযোগ সুবিধা
এখানে বিভিন্ন ধর্মীয় লোকজন বসবাস করে। যার যার ধর্ম তার তার মত করেই এখানে পালন করতে পারে। কারো কোন সমস্যা হয় না। যার যার দেশীয় কিছু সংস্কৃতি আছে সেগুলো যার যার মতো করে পালন করতে পারে।
এখানে আসলে যে সমস্যাটার মধ্যে পড়তে হয় সেটা হলো ভাষাগত সমস্যা সেজন্যই ভাষাটা তো অনেক ডেভেলপ করতে হয়। ভাষা শিখতে হয় আর এই ভাষা শেখার জন্য এখানে একেবারে ফ্রিতে অনেক অনেক স্কুল আছে কোর্স করার জন্য।
ফ্রান্স সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন
প্রশ্ন: বাংলাদেশ থেকে ফ্রান্স কত কিলোমিটার?
উত্তর: ৭৯৯০ কিলোমিটার।
প্রশ্ন: ফ্রান্সের ১ টাকা বাংলাদেশের কত?
উত্তর: ফ্রান্সের ১ টাকা সমান বাংলাদেশী ১১৮.৮৩ টাকা (২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাস অনুযায়ী)
প্রশ্ন: ঢাকা থেকে ফ্রান্সের বিমান ভাড়া কত?
উত্তর: বিমান ভেদে ঢাকা থেকে ফ্রান্সের বিমান ভাড়া ১ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ পর্যন্ত।
পরিশেষে
আশা করি, উপরোক্ত আলোচনা থেকে ফ্রান্সের নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায় তথা বৈধ হওয়ার উপায় এবং ফ্রান্সের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা পেয়েছেন। আমাদের আজকের এই লেখাটি পরে আপনি আশা করছি অনেক বেশি উপকৃত হয়েছেন। এই রকম নতুন নতুন তথ্যবহুল আর্টিকেল সম্পর্কে জানার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করুন এবং পোষ্টটি অন্যদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্ত। ধন্যবাদ