কিডনি পাথর গলায় কোন খাবার? জানতে হলে পড়তে থাকুন আমাদের আজকের এই পোস্ট। হ্যালো এভরিওয়ান আসসালামু আলাইকুম, আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু কিডনিতে পাথর হলে মূলত কোন কোন খাবার খাওয়া উচিত এবং কোন কোন খাবার পরিহার করা উচিত, সেই সাথে নির্দিষ্ট কোন খাবার গুলো খেলে দ্রুত কিডনির পাথর গলে যায়!
তো আপনি যদি ইতোমধ্যে কিডনির পাথর জনিত সমস্যায় ভুগেন তাহলে খাবারের ক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ গুলো মেনে চলুন। কেননা আপনি যদি সুস্থ ও সুন্দর জীবন ফিরে পেতে চান তাহলে অবশ্যই ডায়েটে রাখতে হবে কিছু খাবার, যেগুলো খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তো আসুন জেনে নেই, কিডনি পাথর গলায় কোন খাবার গুলো সে সম্পর্কে এ টু জেড!
(toc) #title=(এক নজরে সম্পূর্ণ লেখা পড়ুন)
কিডনি পাথর গলায় কোন খাবার | কিডনিতে পাথর হলে কি কি খাবার খাওয়া উচিত?
কিডনিতে পাথর হলে ঐ সকল রোগীদের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত খাবার হচ্ছে-
- গমের রুটি
- বাদামি চালের ভাত
- ওটস
- মটরশুঁটি
- মসুর ডাল
- সবুজ শাকসবজি
- বেরি, বেল মরিচ
- টমেটো
- কমলালেবু
- লেবু
- দই
- পনির সহ ফর্টিফাইভ উদ্ভিদভিত্তিক খাবার।
এক কথায়– কিডনিতে পাথর হলে সেটা থেকে দ্রুত সেরে উঠতে সব সময় সাইট্রাস জাতীয় খাবার, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার ও পরিমিত প্রোটিন গ্রহণ করা জরুরী।
মনে রাখবেন কিডনিতে পাথর হলে খাবারের মাধ্যমে অনেক সময় সফলভাবে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। তবে অবশ্যই এটা জানতে হবে পাথরটি কোন প্রকৃতির এবং কোন কোন খাবার খেলে সেটা কিডনিকে উত্তেজিত করে এবং কোন কোন খাবার খেলে ঠিক রাখে। তাই এ ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
কিডনিতে পাথর? জেনে নিন খাবার সম্পর্কে কিছু পরামর্শ
যারা ইতিমধ্যে কিডনিতে পাথর জনিত সমস্যায় ভুগছেন তাদের অবশ্যই কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরী এবং কিছু কিছু খাবার পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। যেমন ধরুন
- প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। কেননা পরিমিত পরিমাণে পানি পান করলে রোগীর প্রস্রাব পাতলা হবে আর প্রস্রাবে পাথর গঠনকারী খনিজ পদার্থের ঘনত্ব কমে আসবে। এতে করে দারুন উপকার মিলবে সেটা তো বুঝতেই পারছেন।
- ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কমিয়ে রাখার মাধ্যমে কিডনি সারিয়ে তোলা সম্ভব হয়। আর তাই খাবারে লবন এর ব্যবহার কমিয়ে ফেলতে হবে অথবা বাদ দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। বিশেষ করে কিডনিতে পাথর হলে কাঁচা লবণ খাওয়া একদমই চলবে না।
- যাদের কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা রয়েছে অথবা ইতোমধ্যে পাথর হয়েছে তাদের ভিটামিন বা মিনারেলের বড় মাত্রা গ্রহণ করলে পাথর অতিরিক্ত বড় হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। তাই এ বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে এবং ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিতে হবে।
- পাশাপাশি কিডনি স্টোন অর্থাৎ কিডনিতে পাথর থেকে রক্ষা পেতে হলে খাবারের পাশাপাশি জীবন থেকে বাদ দিতে হবে কয়েকটি জিনিস। সেগুলো হচ্ছে–
- কোল্ড ড্রিমস
- প্রাণিজ প্রোটিন যেমন ডিম মাছ মাংস (বরাবরের মতবাদ নয় তবে কিডনিতে পাথর হলে খাওয়ার পরিমাণটা অনেকটাই কমাতে হবে)
- অ্যালকোহল অর্থাৎ মদ্যপান
মনে রাখবেন, আপনি যদি কিডনির রোগী হয়ে থাকেন আপনার যদি কিডনিতে স্টোন হয়ে থাকে বা স্টোন হবার প্রবণতা থেকে থাকে তাহলে মদ্যপান সেটাকে গুরুতর পর্যায়ে নিয়ে যাবে আর ধীরে ধীরে আপনার জটিলতা বাড়বে।
কিডনিতে পাথর হলে কোন কোন খাবার এড়িয়ে চলতে হবে?
কিডনিতে পাথর হলে সর্বদা দশটি খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। সেগুলো হচ্ছে
- ক্যাফেইন যুক্ত খাবার
- অতিমাত্রায় প্রোটিন যুক্ত খাবার
- সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবার
- অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার
- অক্সালেট সমৃদ্ধ খাবার সমূহ
- ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার
- হেরিং জাতীয় ছোট মাছ
- এস্পেরাগাস
- অ্যালকোহল ও গ্যাজানো খামির।
তো পাঠক বন্ধুরা, যেহেতু কিডনিতে পাথর এটি একটি জটিল সমস্যা তাই অবশ্যই ডায়েটে পরিবর্তন নিয়ে আসুন। সব সময় তরল খাবার গ্রহণ করুন। মনে রাখবেন যারা কিডনিতে পাথরের সমস্যায় ভুগছেন তাদের খাদ্য তালিকায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে তরল গ্রহণ অর্থাৎ আপনাকে পানি পান করতে হবে প্রচুর।
এখন আসুন জেনে নেই– কিডনিতে পাথর হলে কি কি সমস্যা হয় কোন কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় এবং কিডনির সমস্যা সম্পর্কিত বহুল জিজ্ঞাসিত কিছু বিষয়। তবে আপনি চাইলে আরো করতে পারেন কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় এবং কিডনির ক্রিয়েটিনিন কত হলে ডায়ালাইসিস করতে হয় সম্পর্কিত আরো দুইটি পোস্ট।
কিডনিতে পাথর হওয়ার কারণ | কিডনি স্টোনসের কারণ
কিডনিতে পাথর হওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। এ ব্যাপারে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যখন প্রস্রাবে ক্যালসিয়াম ইউরিক এসিড এবং অক্সালেট এর পরিমাণ অত্যাধিক বেশি মাত্রায় পৌঁছে যায় তখন পাথর অর্থাৎ স্টোনসের আবির্ভাব ঘটে। এ পর্যায়ে আমরা এমন কিছু কারন বা বিষয় উল্লেখ করব যেগুলোকে আপনি কিডনি স্টোনসের কারণ হিসেবে নিজের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে পারেন। যথা:
- অপর্যাপ্ত পানি পান
- অতিরিক্ত শারীরিক ওজন
- অতিরিক্ত পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ
- অক্সালেট সমৃদ্ধ খাবার বেশি পরিমাণে খাওয়া
- ক্যালসিয়াম বা তরল খাবারের ঘাটতি
- জেনেটিক কারণ এবং সার্জারির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
একটু ভালোভাবে লক্ষ্য করলে এটা স্পষ্ট যে সাধারণত খাবারের কারণে অর্থাৎ সঠিক ডায়েট চার্ট ফলো না করার কারণেই কিডনি স্টোনস এর আবির্ভাব ঘটে। আর তাই আমাদের প্রত্যেকের পরিমিত পরিমাণে খাবার গ্রহণ করা উচিত পাশাপাশি সুন্দর সুশৃংখল একটি লাইফ স্টাইল মেনটেইন করা জরুরি।
কিডনিতে পাথর রোগের লক্ষণ
প্রত্যেকটি রোগের কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ বা উপসর্গ প্রকাশ পায়। আপনার মাঝে যদি আমাদের উল্লেখিত এই কয়েকটি লক্ষণ প্রকাশ পেয়ে থাকে তাহলে ধরে নিতে পারেন আপনার মধ্যে কিডনি স্টোন এর লক্ষণ দেখা দিচ্ছে। সেগুলো হলো
- বমি অথবা বমি বমি ভাব
- শরীর অনেক বেশি ঠান্ডা হয়ে যাওয়া
- প্রস্রাবের অস্বাভাবিক রং
- প্রস্রাব এর সঙ্গে রক্ত যাওয়া
- জ্বর এবং পিঠের পাশে বা পেটে ব্যথা অনুভব।
এছাড়াও মহিলাদের ব্যথা ল্যাবিয়া (মহিলাদের যোনি ব্যথা), অণ্ডকোষ (পুরুষদের অণ্ডকোষে ব্যথা), এবং গ্রোইন এলাকায় (গ্রোইন অস্বস্তি) বিকিরণ হতে পারে।
আর হ্যাঁ, কিডনিতে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের পাথর হয়ে থাকে। মূলত পাথরের গঠনের ওপর ভিত্তি করে এদের শ্রেণীবদ্ধ করা হয়। এ পর্যায়ে আমরা কিডনি পাথরের প্রকারভেদ গুলো উল্লেখ করছি। যথা –
- ক্যালসিয়াম পাথর
- সট্রুভাইট পাথর
- সিস্টাইন স্টোনস
- ইউরিক অ্যাসিড পাথর
তো অডিয়েন্স বন্ধুরা, যেহেতু কিডনিতে পাথর এর সমস্যাটি শুধুমাত্র খাবারের পরিবর্তন নিয়ে আসার মাধ্যমে সারিয়ে তোলা সম্ভব, তাই অবশ্যই সঠিক খাবারগুলো খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। পর্যাপ্ত পানি পান করার পাশাপাশি আরো খান ঐ সকল ফলমূল যেগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি রয়েছে।
সেই সাথে আপনি যদি স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এক হাজার প্লাস পোস্ট দেখতে চান তাহলে সরাসরি ভিজিট করুন বা সরাসরি ক্লিক করুন স্বাস্থ্য বিষয়ক ক্যাটাগরির লিস্টে। যেখানে আপনাদের প্রয়োজনীয় বিষয়বস্তু নিয়ে আমরা ইতোমধ্যে বেশ কিছু নিবন্ধন প্রকাশ করেছি। তো সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।