জিংক বি ট্যাবলেট হল একটি জনপ্রিয় খাদ্যতালিকাগত সাপ্লিমেন্ট যা বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে। অনেকে জিংক বি ট্যাবলেট ওজন বৃদ্ধির সাথে সম্পর্কিত কিনা তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এই নিবন্ধে, আমরা জিংক বি ট্যাবলেট এবং ওজন বৃদ্ধির মধ্যে সম্ভাব্য সম্পর্ক, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং বিকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
শরীরের ওজন বৃদ্ধি বা মোটা হওয়ার সাথে অবশ্যই শরীরের পুষ্টি উপাদানগুলি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আপনারা যারা জানতে চান জিংক বি ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয় কিনা সে সম্পর্কে তাঁদের জন্যেই মূলত আমাদের আজকের এই লেখাটি।
এই লেখায় আমরা জিংক ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবাে এবং আরও জানব জিংক বি ট্যাবলেট খেলে কি লম্বা হয়, খাওয়ার নিয়ম এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, জিংক বি ট্যাবলেট এর দাম কত সম্পর্কে।
কোনো ঔষধ সেবন করতে হলে অবশ্যই সেই ঔষধ সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখা প্রয়োজন। কারণ ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কখনো কখনো শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। সকলের উচিত ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলো দূরে রাখতে এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলো কিভাবে এড়ানো যায় সে দিকে খেয়াল রাখতে।
(toc) #title=(এক নজরে সম্পূর্ণ লেখা পড়ুন)
জিংক বি ট্যাবলেট কি?
জিংক বি ট্যাবলেট একটি ডায়েটারি সাপ্লিমেন্ট, যা মূলত জিংক এবং ভিটামিন বি-কমপ্লেক্সের সমন্বয়ে তৈরি করা হয়। এই ট্যাবলেটটি সাধারণত শরীরে জিংক এবং ভিটামিন বি-এর অভাব পূরণের জন্য ব্যবহার করা হয়।
জিংক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, ক্ষত সারানো, কোষের বৃদ্ধি এবং বিপাক নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। জিংক বি ট্যাবলেটগুলিতে সাধারণত জিংকের বিভিন্ন রূপ থাকে, যেমন জিংক গ্লুকোনেট, জিংক সালফেট এবং জিংক অ্যাসিটেট।
জিংক বি ট্যাবলেট কি কাজ করে
জিংক বি ট্যাবলেট বাজারে নিয়ে এসেছে এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। যার প্রতিটি ট্যাবলেটে রয়েছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ও জিংক সালফেট মনোহাইড্রেট।
জিংক সালফেট বিভিন্ন বায়োলজিক্যাল ফাংশন যেমনঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, শরীরের কোন ক্ষত থাকলে সেটা সারাতে সাহায্য করে, বিশেষ করে বাড়ন্ত বয়সে শারীরিক বৃদ্ধি এবং মানসিক বিকাশ ঘটায়। জিংক গর্ভাবস্থায়, শৈশব এবং কৈশোরে স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও গঠনে সহায়তা করে।
এছাড়াও নখে সাদা দাগ, বিষণ্ণতার প্রবনতা, ঘন ঘন ইনফেকশন, মানসিক সমস্যা, দূর্বল প্রজনন ক্ষমতা, প্রস্টেট এর সমস্যা, দেরিতে ঘা শুকানো, ডায়রিয়া, দূর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, মানসিক দূর্বলতা, অমসৃন ত্বক এবং ওজন কমে যাওয়া ভালো করতে জিংক বি ট্যাবলেট কাজ করে।
জিংক বি খেলে কি হয়
জিংক বি ট্যাবলেট গ্রহণের ফলে শরীরের উপর বিভিন্ন ধরণের প্রভাব পরিলক্ষিত হতে পারে। এটি মূলত জিংক এবং ভিটামিন বি-কমপ্লেক্সের সমন্বয়ে তৈরি হওয়ায় এই দুটি উপাদানের উপকারিতা পেতে সাহায্য করে। এখানে জিংক বি ট্যাবলেট খাওয়ার কিছু প্রধান প্রভাব ও উপকারিতার তালিকা দেওয়া হলো:
- দৈহিক এবং মানসিক বিকাশ বৃদ্ধি পায়
- খাবার রুচি বৃদ্ধি পায়
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি করে
- ক্ষুধামন্দা থাকলে তা ভালো করে
- শরীরের ক্ষত থাকলে তা ভালো করতে অনেক কার্যকর
- গর্ভপাতের ঝুকি কমাতে কাজ করে
- ডিহাইড্রেশন থেকে মুক্তি দেয়
- ব্রণ দূর করে
- নখে সাদা দাগ ভালো করতে কাজ করে
- শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান গুলো নিশ্চিত করে থাকে
- মানসিক অলসতা দূর করতে কাজ করে
- নিদ্রা সমস্যা দূর করে
- প্রস্টেট এর সমস্যা দূর করতে কার্যকর
- খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করে। যার কারণে পূর্বের থেকে বেশি খাওয়া যায়। তবে হ্যাঁ এটি কিন্ত রুচির ট্যাবলেট নয়।
- উচ্চতা বৃদ্ধিতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
- শরীরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট তৈরি হয় যা শরীরের জন্য প্রতিরক্ষা হিসেবে কাজ করে।
- বাচ্চাদের ওজন বৃদ্ধি করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
আর্টিকেলের এই অংশে জানবাে জিংক বি ট্যাবলেট খেলে কি ওজন বাড়ে সে সম্পর্কে বিস্তারিত।
জিংক বি ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয়
জি হ্যাঁ, জিংক বি ট্যাবলেট খেলে শরীর মোটা হয়। জিংক বি ট্যাবলেট শরীরের বিভিন্ন ধরনের বায়োলজিক্যাল ফাংশনে কাজ করে থাকে। এই ট্যাবলেট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে, ক্ষত সারানোর কাজ করে, পরিপাক, মানসিক ও শারীরিক বিকাশ এবং শিশু-কিশোরদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে কাজ করে।
অনেক সময় দেখা যায় যে, প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে অনেকের ক্ষুধামন্দা, খাবারে স্বাদ কম লাগা এবং ঘ্রাণ শক্তি কমতে থাকে। এই সকল সমস্যার ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী জিংক বি ট্যাবলেট সেবন করলে খুব সহজেই এই রোগগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া পায়।
জিংক বি খাওয়ার কারনে খাবার হজম এবং খাবারের প্রতি রুচি বৃদ্ধি পায়। সেক্ষেত্রে পরোক্ষ ভাবে বলা যায় যে, জিংক বি ট্যাবলেট খেলে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ জিংক বি ট্যাবলেট খেলে মোটা হওয়া যায়।
কিন্তু হ্যাঁ এটি আপনার ওজন বৃদ্ধি এবং মোটা হতে খুব বেশি সহায়তা করবে না। যেমনটি কোনো মোটা হওয়ার ঔষধ খেলে মোটা হওয়ার কথা সেই তুলনায়। আর হ্যাঁ আপনি যদি একান্তই আপনার দেহের ওজন বৃদ্ধি কিংবা মোটা হতে চান তবে অন্য ধরনের ট্যাবলেট সেবন করতে পারেন।
জিংক বি ট্যাবলেট মানবদেহে জিংক এবং ভিটামিন বি এর অভাব পূরণ করতে কাজ করে। তবে হ্যাঁ মনে রাখবেন, জিংক বি ট্যাবলেট কিন্তু শরীরের ওজন বৃদ্ধির কোনও ঔষধ নয়। অর্থাৎ এটি কোন মোটা হওয়ার ট্যাবলেট নয়। মূলত এই ট্যাবলেট নির্দেশিত হয়ে থাকে সাধারণত শরীরে জিংক ও ভিটামিন বি এর অভাব পূরণ করার জন্য। যার কারণে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে।
জিংক বি ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা
জিংক বি ট্যাবলেট খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে। এটি জিংক এবং ভিটামিন বি-কমপ্লেক্সের সমন্বয়ে তৈরি একটি সাপ্লিমেন্ট, যা শরীরের বিভিন্ন কার্যকারিতায় সহায়ক। নিচে এর কিছু প্রধান উপকারিতা উল্লেখ করা হলো:
১. ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে:
জিংক ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে, ফলে শরীর বিভিন্ন রোগ এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে ভালোভাবে লড়াই করতে পারে।
২. ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে:
জিংক এবং ভিটামিন বি ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক। এটি ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
৩. শক্তি বৃদ্ধি করে:
ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স শরীরের শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সহায়ক, যা ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে এবং সারাদিন উজ্জীবিত থাকতে সহায়তা করে।
৪. মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করে:
ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে, মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে, এবং মেজাজ ভাল রাখে।
৫. হজম শক্তি বাড়াতে উপকারী:
জিংক এবং ভিটামিন বি পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে, যা হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে।
৬. দ্রুত ক্ষত নিরাময় করে:
জিংক ক্ষত নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি ক্ষত সারানোর প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।
আরও দেখুনঃ ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট কোনটা ভালো? আপনার স্বাস্থ্যের জন্য কোনটি সেরা জেনে নিন
শিশুদের ও বয়স্কদের স্নায়ু এবং শারীরিক গঠন সুগঠিত করতে এবং লোহিত রক্ত কণিকা তৈরীতে জিংক বি ট্যাবলেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ভিটামিন এর পাশাপাশি শরীরের জিংক এর অভাব পূরণের মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক দুর্বলতা দূর করা সহ ভিটামিন বি এবং জিংক এর অভাবে দেখা দেয়া সকল ধরনের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে জিংক বি ট্যাবলেট।
সুতরাং, যদি আপনি মনে করেন যে, খাবারে অরুচি বা ক্ষুধামন্দা কিংবা স্নায়ুবিক দুর্বলতা জনিত কারণে দিন দিন আপনার ওজন কমে যাচ্ছে অথবা শরীরে ঘন ঘন ইনফেকশন এবং চর্মরোগ দেখা দেয় তাহলে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জিংক বি ট্যাবলেট খেতে পারেন।
জিংক ট্যাবলেট কারা ব্যবহার করতে পারেন
- যারা জিংক এবং ভিটামিন বি-এর ঘাটতিতে ভুগছেন।
- যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল।
- যারা ত্বক, চুল বা নখের সমস্যায় ভুগছেন।
- যারা মানসিক চাপ বা ক্লান্তিতে ভুগছেন।
জিংক বি ট্যাবলেট এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
জিংক বি ট্যাবলেট টি সাধারণত সুসহনীয়। নির্দিষ্ট ভিটামিনের ক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া উল্লেখ করা থাকলেও সেগুলো সাধারণত: নির্দেশিত মাত্রা থেকে বেশী মাত্রায় ঘটে। তেমনি কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিম্নরুপঃ
- বমি বমি ভাব
- পাকস্থলীর সমস্যা
- কিছু মানুষের ক্ষেত্রে পেটে ব্যথা, মাথাব্যথা বা ডায়রিয়া হতে পারে।
- ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার করা উচিত নয়।
- গর্ভবতী বা স্তন্যদায়ী মায়েরা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এই সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করবেন না।
জিংক বি ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
যারা প্রাপ্তবয়স্ক আছেন এবং ওজন কমপক্ষে ৩০ কেজির বেশি তাদের ১ টি করে ট্যাবলেট দিনে ২-৩ বার খাবার পরামর্শ একজন ডাক্তার দিয়ে থাকেন। এবং যাদের জিংক এবং ভিটামিং বি কমপ্লেক্স এর প্রতি সংবেদনশীল রয়েছে তাদের তাদের ক্ষেত্রে এই জিংক বি ট্যাবলেট প্রতি নির্দেশিত। এছাড়া ট্রেট্রাসাইক্লিন এর গ্রুপ ঔষধ সেবন করলে সাথে এই এই জিংক বি ঔষধ টি সেবন করা যাবে না।
তাছাড়া জিংক বি ঔষধটি খুবি সুসহনীয়। তাছাড়া এই ঔষধটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। তবে কারো কারো, সবার ক্ষেত্রে না, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া বা পাকস্থলীর সমস্যা হতে পারে। এগুলাে সাময়িক মারাত্মক নয়। তবে কোনো সমস্যা যদি আপনার কাছে তীব্র মনে হয় তবে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
আর গর্ভাবস্থায় এবং স্তনদান কালেও এই জিংক বি ট্যাবলেট সেবন করা যাবে। আপনার শরীরকে আরও রোগমুক্ত ও ফিট রাখতে জিংক বি ট্যাবলেট খেতে পারেন। অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী। কারণ ডাক্তার আপনাকে আপনার শারীরিক অবস্থা বুঝে কি মাত্রায় আপনার শরীর জিংক প্রয়োজন তাঁর সঠিক ডোজ নির্ধারণ করে দিতে পারবেন।
বেবি জিংক ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
১০ কেজির নিচের শিশুদের ক্ষেত্রেঃ ৫ মিঃলিঃ (১ চা চামচ) দৈনিক ২ বার খাবারের পরে।
১০ কেজি থেকে ৩০ কেজি পর্যন্ত শিশুদের জন্যঃ ১০ মিঃলিঃ (২ চা চামচ) দৈনিক ১-৩ বার খাবারের পরে।
প্রাপ্ত বয়স্ক এবং ৩০ কেজির ঊর্দ্ধে শিশুদের জন্যঃ ২০ মিঃলিঃ (৪ চা চামচ) দৈনিক ১-৩ বার খাবারের পরে।
আহারের ১ ঘন্টা পূর্বে অথবা ২ ঘন্টা পরে সেবনে এই ঔষধটি তার সর্বোচ্চ কার্যকারিতা দেখায়। পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা হলে এটি আহারের সাথে সেবন করা যেতে পারে।
আরও জানুনঃ ভাঙ্গা হাড় জোড়া লাগতে কতদিন সময় লাগে জেনে নিন
চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক ঔষধ সেবন করুন
জিংক বি ট্যাবলেট এর দাম কত
জিংক বি ট্যাবলেট এর প্রতি পিসের দাম ৩.৫০ টাকা। এবং সম্পূর্ণ পট এর দাম ১০৫ টাকা মাত্র। অনেক সময়য় এটি ৯৫ টাকাতে কিনতে পাওয়া যায়। এটি আপনার কাছের যেকোন ফার্মেসি থেকে কিনতে পারবেন।
ঔষধ ক্রয় করার আগে এর উৎপাদন তারিখ এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখ দেখে নিবেন। এই ট্যাবলেট আলো থেকে দূরে ঠান্ডা ও শুষ্ক স্থানে রাখুন। সকল প্রকার ঔষধ শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।
জিংক এর অভাবজনিত রোগ - জিংক এর অভাবে কি হয়?
জিংক এর অভাব হলে অনেক ধরনের রোগ হয়ে থাকে। অনেকে এই সম্পর্কে জানেন না। জিংক এর অভাবজনিত রোগ গুলো সম্পর্কে জানলে আগে থেকেই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারবেন। তবে চলুন জেনে নেই জিংক এর অভাবে কি হয় সম্পর্কে।
- ইমিউন সিস্টেম দুর্বলতা
- চোখের সমস্যা
- ঘন ঘন সর্দি জ্বর
- চুল ও নখের সমস্যা
- ওজন কমে যাওয়া
- দীর্ঘমেয়াদী ক্ষত
- মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা
- বন্ধ্যাত্ব
১। ইমিউন সিস্টেম দুর্বলতা: জিংক একটি গুরুত্বপূর্ণ মিনারল যা ইমিউন সিস্টেমকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। এর অভাবে ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হতে পারে এবং শরীরে রোগ ও সংক্রমণের জন্য প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হতে পারে।
২। চোখের সমস্যা: চোখ ভালো রাখতেও জিংক অপরিহার্য। শরীরে জিংকের ঘাটতি দেখা দিলে চোখের সমস্যা দেখা দেওয়া কিন্ত অসম্ভব কিছু নয়। দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, চোখে আবছা আবছা দেখা কিংবা চোখ তির্যক হয়ে আসা জিংক কম থাকার লক্ষণ হতে পারে। এই ধরনের যে কোনো সমস্যায় ডাক্তারদের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়।
আরও জানুনঃ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তারদের তালিকা
৩। ত্বকের সমস্যা: জিংকের অভাব ত্বকের অতিস্থূলতা, ড্রাইনেস, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
৪। ওজন কমে যাওয়া: জিংকের অভাবজনিত কারনে দেখা দিতে পারে ক্ষুধামান্দ্য। ক্ষুধামান্দ্যে আক্রান্ত ব্যক্তিদের খাওয়া দাওয়ায় আগ্রহ কমে যায়। পর্যাপ্ত খাওয়া দাওয়া না করার ফলে দেহে পুষ্টির অভাব হয়, যার ফলশ্রুতিতে কমে যেতে পারে ওজন।
৫। চুল এবং নখের সমস্যা: জিংকের অভাব অধিক চুল পড়া, চুলের আগা ভেঙে যাওয়া কিংবা চুল পাতলা হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও নখে সাদা দাগ এবং নখের ভাঁজ সৃষ্টি করতে পারে।
আরও দেখুনঃ টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে গেলে কি হয়: বাড়ানোর উপায় জেনে নিন
৬। মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা: জিংক মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এর অভাব মানসিক সমস্যা যেমন মনস্তাপ, অস্থিরতা এবং মানসিক চাপের সাথে সম্পর্কিত সমস্যা হতে পারে।
৭। পাচনতন্ত্রের সমস্যা: জিংক পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা সঠিকভাবে রক্ষা করে এবং খাদ্য পূর্বস্থার সঠিক অদরণ ও পচনে সাহায্য করে। যদি দেখে জিংকের অভাব হয় তবে পাচনতন্ত্রে সমস্যা দেখা দেয়।
৮। ঘন ঘন সর্দি জ্বর: জিংক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ফলে জিংকের অভাবে শরীরে রোগ সংক্রমণের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়, ফলে লেগেই থাকে সর্দি কাশির মতো সমস্যা। গবেষণায় জানা গেছে, প্রবীণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে জিংকের অভাবে সংক্রমণের ঝুকি বেড়ে যেতে পারে প্রায় ৬৬ শতাংশ।
কোন কোন খাবারে জিংক পাওয়া যায়
জিংক অনেক ধরণের খাবারে পাওয়া যায়, যেমন:
- মিষ্টি কুমড়ার বিচি
- দুগ্ধজাত খাবার
- দুধ-ডিম-দই
- ডার্ক চকলেট
- মাশরুম
- ওট
- কাজু বাদাম
- সবজি
- মুরগির মাংস
- রেডমিট
- কাঁকড়া
- বিভিন্ন রকমের ডাল
উপসংহার
জিংক বি ট্যাবলেট সম্পর্কে আজকে ছিল এই পর্যন্তই। এর সম্পর্কে আপনার যদি আরো কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাকে কমেন্টস করে জানাতে পারেন। আমি আপনার প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো। আর আমাদের আজকের লেখাটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না। আজ এই পর্যন্তই দেখা হবে পরবর্তী কোন লেখায় সেই পর্যন্ত ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।