ব্রেস্ট ক্যান্সার স্টেজ ৩ বাচার হার কত দিন

হাসিবুর
লিখেছেন -
0

ব্রেস্ট ক্যান্সার স্টেজ ৩ বাচার হার কত দিন : যদি কোন মহিলা ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় তাহলে কতদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারেন, ব্রেস্ট ক্যান্সার মানেই কি মৃত্যু! আজকের পোস্টে জানবো এই প্রত্যেকটি প্রশ্নের উত্তর।

দেখুন আপনি যদি ক্যান্সার সম্পর্কিত বিষয়ে অনুসন্ধান করে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই এটা জানবেন স্তন ক্যান্সার অর্থাৎ ব্রেস্ট ক্যান্সার সারাবিশ্বে লাখ লাখ মহিলাদের মাঝে মারাত্মক আতঙ্ক হিসেবে ধরা দিয়েছে।

এটি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর একটি সমস্যা। কেননা যদি কোন মহিলার স্তন ক্যান্সার দেখা দেয় তাহলে একবার সেরে যাওয়ার এক থেকে দু বছরের মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগটি দ্বিতীয়বার আবারো এন্ট্রি নেয়।

এমনকি ক্যান্সারের রোগীর রিপোর্ট অনুসন্ধান করলে আপনি এটা জানতে পারবেন ব্রেস্ট ক্যান্সারের রোগীরা খুব বেশি দিন পর্যন্ত বাঁচতে পারেন না। পাশাপাশি আমাদের ওয়েবসাইট থেকে এই লেখাটি ব্রেস্ট ক্যান্সার স্টেজ ২ বাচার হার কত দিন পরতে পারেন।

(toc) #title=(এক নজরে সম্পূর্ণ লেখা পড়ুন)

ব্রেস্ট ক্যান্সার স্টেজ ৩ বাচার হার কত দিন

ব্রেস্ট ক্যান্সার স্টেজ ৩ বাচার হার কত দিন

বেঁচে থাকার বিষয়টি মূলত ক্যান্সারের পর্যায়ের ওপর নির্ভর করে। ব্রেস্ট ক্যান্সার হলে সেটা কোন পর্যায়ে রয়েছে? প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় নাকি চতুর্থ, এই বিষয়টি জানা জরুরী।

কেননা ইতোমধ্যে বেশ কিছু চিকিৎসকরা এটা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা করে অবশেষে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, যাদের ব্রেস্ট ক্যান্সার স্টেজ তৃতীয়তে অবস্থান করছেন তাদের বেঁচে থাকার সময়সীমা সর্বনিম্ন ৫ বছর থেকে শুরু করে তার বেশি সময় পর্যন্ত হতে পারে। যদিও বেঁচে থাকার বিষয়টি একমাত্র আল্লাহ তায়ালা ভালো জানেন। এখানে উল্লেখ করা তথ্য ডাক্তারদের ধারনামাত্র।

অতএব আপনার কপাল যদি ভাল হয় এবং আপনি ব্রেস্ট ক্যান্সারের জন্য সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করেন, সঠিক লাইফস্টাইল মেইনটেইন করেন তাহলে মোটামুটি পাঁচ বছরের বেশি সময় ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারবেন।

এখন আসুন জেনে নেই ব্রেস্ট ক্যান্সার হলে সাধারণত কি কি লক্ষণ প্রকাশ পায়, ব্রেস্ট ক্যান্সার চিকিৎসা বাংলাদেশে কোথায় এবং কোন স্থানে ভালোভাবে হয়, ব্রেস্ট ক্যান্সারে কি কি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি এবং সতর্ক হওয়া জরুরি এ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি সম্পর্কে এ টু জেড।

ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ সমূহ

ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত নারীদের মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। আর কেউ যদি এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে লক্ষণ বা উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয়–

  • স্তনের আকারের হঠাৎ পরিবর্তন।
  • স্তন বৃন্তের আশেপাশে ফুসকুড়ি অথবা চুলকানি জাতীয় সমস্যা।
  • স্তনে অতিরিক্ত ব্যথা এবং কোন অংশ চাকা চাকা হয়ে ওঠা।
  • বগলে ফুলে যাওয়া অথবা স্তনে ভেতরে শক্ত হয়ে যাওয়া, যেটা অস্বাভাবিক।

মূলত এছাড়াও আপনি যদি আরও ভালোভাবে বুঝতে চান যে আপনার ব্রেস্ট টিউমার হয়েছে কিনা বা ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কিনা, তাহলে দুই থেকে তিনটি লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার সাথে সাথে নিকটস্থ চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন।

মনে রাখবেন, ব্রেস্ট ক্যান্সার মহিলাদের সবচেয়ে প্রচলিত ধরনের ক্যান্সার এবং বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি নির্ণয় করা জটিল রোগ। আর এই রোগটি মূলত শুরুর দিকে ধরা সম্ভব হয়ে ওঠে না।

কেননা ইতোমধ্যে চিকিৎসকরা তাদের অভিজ্ঞতা থেকে এটা জানিয়েছেন, অনেক রোগী স্তন ক্যান্সারের চতুর্থ স্তরে এসে বুঝতে পারেন যে তাদের স্তন ক্যান্সার হয়েছে। আর চতুর্থ স্তরের ফলাফল অত্যন্ত ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।

এজন্য নিজের শরীরের যত্ন নিন, নিজের অসুস্থতার ব্যাপারে নজর রাখুন, সুন্দর ও সুস্থভাবে বাঁচার চেষ্টা করুন। সেই সাথে ব্রেস্ট ক্যান্সার স্টেজ ৩ থেকে মুক্তির জন্য কি কি করা লাগতে পারে এবং কি কি খাবার খেতে হতে পারে সে সম্পর্কে জানুন খুঁটিনাটি।

ব্রেস্ট ক্যান্সার হলে করণীয় | ব্রেস্ট ক্যান্সার স্টেজ ৩ থেকে বাঁচার উপায়

ব্রেস্ট ক্যান্সার হলে সর্বপ্রথম করনীয় কাজ হবে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সঠিক লাইফস্টাইল মেইনটেইন করে চলা। সাধারণত মদ্যপানের কারণে, শরীরে অতিরিক্ত তামাক জাতীয় পদার্থের আগমনে, বাড়তি ওজন এবং পোস্টমেনপোজাল হরমোন থেরাপি অতিরিক্ত হওয়ার কারণে ব্রেস্ট ক্যান্সারের সৃষ্টি হয়ে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন কারণ রয়েছে এই ক্যান্সার সৃষ্টির পেছনে।

মূলত যদি আপনি জানতে পারেন যে আপনার কোন কারণে ক্যান্সার হয়েছে তাহলে সবার প্রথমে ওই কারণকে বাদ দিতে হবে। মানে আপনার যদি অতিরিক্ত ওজনের জন্য ব্রেস্ট ক্যান্সার হয় তাহলে ওজন কমাতে হবে, যদি মদ্যপান বা তামাক জাতীয় পদার্থ খাওয়ার কারণে হয়ে থাকে তাহলে সেই নেশা ছাড়তে হবে, শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালে যদি হয়ে থাকে তাহলে দুধ খাওয়ানো বন্ধ করতে হবে ইত্যাদি।

আর হ্যাঁ, যদি কোন ব্যক্তির ব্রেস্ট ক্যান্সার হয়ে থাকে তাহলে খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে তাজা শাকসবজি এবং ফলমূল। এক কথায় সুষম খাদ্য আহার করার চেষ্টা করতে হবে আপনাকে সাথে সারাদিনের প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তাছাড়াও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন স্তন ক্যান্সার সারিয়ে তুলতে ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম এর যথেষ্ট যোগান দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে।

তো আশা করা যায় আপনি যদি রেস্ট ক্যান্সারের মতো ভয়ংকর রোগে ইতোমধ্যে জড়িয়ে গিয়ে থাকেন তাহলে সঠিক চিকিৎসা এবং সঠিক পরামর্শ মেনে চলার মধ্য দিয়ে সুস্থ জীবন লাভ করবেন। 

ব্রেস্ট ক্যান্সার এর পর্যায় বা ব্রেস্ট ক্যান্সারের ধরন

ব্রেস্ট ক্যান্সারের মোট চারটি পর্যায়ে রয়েছে, অতএব স্তন ক্যান্সার হলে নয় আপনি প্রথম ধাপে বুঝতে পারবেন, নয়তো দ্বিতীয় ধাপে নয়তো তৃতীয় ধাপে অথবা চতুর্থ ধাপে। কিন্তু ইতিমধ্যে ডঃ চক্রবর্তী নামের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, ব্রেস্ট ক্যান্সার নিয়ে সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে প্রায় ৫০ শতাংশ স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত মহিলারা তৃতীয় পর্যায়ে অর্থাৎ ব্রেস্ট ক্যান্সার যখন থার্ড স্টেজে থাকে তখন চিকিৎসকের কাছে আসেন।

যে সময় ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তিটি প্রথম দ্বিতীয় পর্যায় পেরিয়ে তৃতীয় পর্যায়ে অবস্থান করছে এবং সবশেষে লাস্টের পর্যায়ে যেতে চলেছে। যেটা ভয়ঙ্কর এবং অনেকটাই জটিল অবস্থান। আর এই পর্যায়ে গুলো নিয়ে অনেক গবেষণার পর জানা গিয়েছে যে শূন্য পর্যায় এ ক্যান্সার ডিএনএ ত্রুটির উচ্ছে অবস্থান করে, অতঃপর পর্যায়ে এক এ ক্যান্সার একটি সীমিত এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকে।

এরপরে যখন পর্যায় দুয়ে পৌঁছায় তখন তন ক্যান্সার লিম্ফ নোডের মাধ্যমে বাড়তে থাকে এবং ছড়িয়ে পড়ে অতঃপর তৃতীয় পর্যায়ে এটি ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা আরো বেশি বৃদ্ধি পায় আর চতুর্থ পর্যায়ে গিয়ে দূরবর্তী অংশে ছড়িয়ে পড়ে যেমন লিভার ফুসফুসের সঙ্গে চলে যায়।

আর তাই, আমরা পরামর্শ দিব বেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ বা উপসর্গগুলো সর্বদা মাথায় রাখুন এবং যদি কোনো কারণে একটি লক্ষণও বুঝে উঠতে পারেন তাহলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

এখন আসুন আলোচনার শেষ মুহূর্তে বেস্ট ক্যান্সার এবং ব্রেস্ট ক্যান্সার স্টেজ ৩ বাঁচার হার কতদিন এই সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও তার উত্তর সম্পর্কে জেনে নেই।

ব্রেস্ট ক্যান্সার কি ভাল হয়?

যদি প্রাথমিক অবস্থায় ব্রেস্ট ক্যান্সার ধরা পড়ে তাহলে ব্রেস্ট ক্যান্সার ভালো হয়, আর যদি এটা দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় পর্যায়ে ধরা পড়ে তাহলে কিছু সময়ের জন্য ভালো হয়ে গেলেও এক বছর অথবা কিছু বছর পরবর্তীতে পুনরায় ফিরে আসতে পারে।

ব্রেস্ট ক্যান্সার স্টেজ ২ মানে কি?

ব্রেস্ট ক্যান্সার মূলত চারটি ধাপে বিভক্ত। প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যায়ে পর্যন্ত বেস্ট ক্যান্সার শরীরে ছড়ায়। যখন ক্যান্সারের ধরন দ্বিতীয় পর্যায়ে থাকে তখন ব্রেস্ট ক্যান্সার স্টেজ ২ বলে সংগঠন করা হয়। মূলত এ ব্যাপারে চিকিৎসকরা বিস্তারিত ভাবে বলেছেন,

Stage II - সাধারণত পিণ্ডের আকার, এই সময় বা ক্যান্সারের এই পর্যায়ে ২ সেন্টিমিটার এর থেকে ছোট থাকে এবং বৃদ্ধি পেয়ে তা ৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে।

Stage III - এই পর্যায় ক্যান্সার আরো দ্রুত ছড়িয়ে পরতে থাকে। লসিকা-বাহে সংক্রমণ ছড়িয়ে পরে এবং অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কোষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। একে locally advanced breast cancer ও বলা হয়। 

ব্রেস্ট ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে?

একজন মহিলা যদি ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় তাহলে কতদিন বাঁচবে সেটা সুনির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। তবে ব্রেস্ট ক্যান্সার যদি চতুর্থ পর্যায়ে না পৌঁছায় অর্থাৎ চতুর্থ পর্যায়ে পৌঁছানোর আগে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি থাকে।

বিভিন্ন গবেষণার পর বেশ কয়েকটি টিম এটা জানিয়েছেন ক্যান্সার স্তনের কোষের সীমাবদ্ধ থাকে তবে ৯০ শতাংশের বেশি রোগী পাঁচ বছর পরেও বেঁচে থাকে এবং ১০ বছরের বেঁচে থাকার হার প্রায় ৮৪ শতাংশ। অতএব এর উপর ভিত্তি করে বলা যাচ্ছে, ব্রেস্ট ক্যান্সার হলে ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত একজন রোগী বেঁচে থাকেন। 

স্টেজ ৩ ট্রিপল নেগেটিভ ব্রেস্ট ক্যান্সার কি?

স্টেজ ৩ ট্রিপল নেগেটিভ ব্রেস্ট ক্যান্সার হলো ব্রেস্ট ক্যান্সারের একটি ধরণ, যেখানে ক্যান্সার কোষগুলি প্রোজেস্টেরন এবং হার-২ নেগেটিভ হিসেবে অমিলন করে।

এই প্রকারের ব্রেস্ট ক্যান্সার রোগীদের নির্দিষ্ট ধরণের প্রোজেস্টেরন এবং হার-২ নেগেটিভ হিসেবে অমিলন করে, যা হারমোন থেরাপির সাথে অসাধারণ ভাবে সহায়ক।

স্টেজ ৩ ট্রিপল নেগেটিভ ব্রেস্ট ক্যান্সার নিশ্চিত ক্যান্সারের গভীরভাবে প্রভাবিত অবস্থান নির্দেশ করে এবং অধিকাংশই চিকিৎসার জন্য অত্যন্ত প্রতিকূলতা সৃষ্টি করে। তবে, নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি এবং ঔষধ উন্নত হতে থাকলেও, স্টেজ ৩ ট্রিপল নেগেটিভ ব্রেস্ট ক্যান্সার উপর চিকিৎসার প্রভাব কম হতে পারে। 

ব্রেস্ট ক্যান্সার চিকিৎসা খরচ কত?

ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসা খরচ মোটামুটি ১ লাখ টাকার বেশি। তবে আপনি যদি কলকাতায় ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে চান সেক্ষেত্রে এক লক্ষ সত্তর হাজার থেকে সাত লক্ষ পর্যন্ত টাকার প্রয়োজন পড়বে। 

তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আজ এ পর্যন্তই, সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং সুন্দর জীবন যাপন করুন। সবাইকে আল্লাহ হাফেজ।

আপনার মতামত জানান এখানে

0 কমেন্ট

আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

কমেন্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. explore more
Ok, Go it!