আপনি কি স্বপ্নে নামাজ পড়তে দেখেছেন এবং জানতে চাইছেন যে স্বপ্নে নামাজ পড়তে দেখলে কি হয়। তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। স্বপ্ন আমাদের জীবনের একটি স্বাভাবিক ঘটনা আমরা ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখে থাকি।
তবে আমাদের দেখা স্বপ্নগুলো জ্ঞানী ব্যক্তি ছাড়া কারো সাথে বলাবলি বা আলোচনা করা ঠিক নয়। কেননা স্বপ্নের সঠিক ব্যাখ্যা করতে না পারলে অনেক সময় স্বপ্ন দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
তাই স্বপ্নের কথা কাউকে বলতে চাইলে জ্ঞানী কোন ব্যক্তির কাছে বলা ভালো। আর যদি এরকম কাউকে না পাওয়া যায় তাহলে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং দান সাদকা করা উচিত। আজকে আমরা আলোচনা করবো স্বপ্নে নামাজ পড়লে কি হয় এবং এই সম্পর্কে ইসলাম কি বলে সে সম্পর্কে বিস্তারিত।
(toc) #title=(এক নজরে সম্পূর্ণ লেখা পড়ুন)
স্বপ্ন কি
দার্শনিকদের মতে; মানুষের চিন্তা ভাবনার যে প্রতিচ্ছবি তার ঘুমের মাঝে ফুটে ওঠে তাই হল স্বপ্ন। যা হলো শুধু ধারণা এবং চিন্তা প্রসূত। বাস্তবের সাথে স্বপ্নের কোন মিল থাকেনা।
তবে ইসলামিক স্কলাররা এই ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেছেন। তাদের মন্তব্য হলো স্বপ্নই মানুষের ধারণাপ্রসূত নয় বরং অনেক স্বপ্ন রয়েছে যা অর্থবোধক। আর আমরা ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষেরা এটাই বিশ্বাস করে থাকি।
রাসুল (সা.) স্বপ্ন নিয়ে যা বলেছেন
স্বপ্ন হলো ৩ ধরনের। যথাঃ
- একটি হলো ভাল স্বপ্ন যা মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে কোন সুসংবাদ হিসেবে আসে।
- একটি হলো শয়তান কর্তৃক প্রতারণামূলক স্বপ্ন।
- একটি হলো তথা মানুষের চিন্তা চেতনার কল্পনা চিত্র।
রাসুল (সা.) আরো বলেছেন যে, যদি কেউ ভয় বা খারাপ স্বপ্ন দেখে থাকে তাহলে সে যেন তাড়াতাড়ি অজু করে নামাজে দাড়িয়ে যায়। রাসুল (সা.) বলেন; স্বপ্ন হচ্ছে আমার নবুয়তের ৪৬ ভাগের এক ভাগ।
আরো বলেন, স্বপ্ন সত্য হতে পারে যদি রাত বারোটার পরে দেখা হয়। তবে যদি কেউ ফজরের নামাজের আগে পর্যন্ত পবিত্র অবস্থায় ডান কাঁধে শুয়ে থাকে। তাহলে খুব দ্রুতই সে স্বপ্ন সত্যি হতে পারে।
যাদের কাছে স্বপ্নের কথা বলবেন
- জ্ঞানী ব্যক্তি
- যে আপনাকে ভালোবাসে
১. জ্ঞানী ব্যক্তি: স্বপ্নের ব্যাখ্যা বা ইঙ্গিত সব লোক বুঝতে পারে না। তাই জ্ঞানী ছাড়া কারো কাছে স্বপ্নের কথা বলা উচিত নয়।
২. যে আপনাকে ভালোবাসে: ভালো স্বপ্ন দেখলে এমন ব্যক্তির কাছে বলবেন, যে আপনাকে ভালোবাসে। যেমনঃ মা, বাবা, ভাই, বোন ইত্যাদি। আপনাকে ভালোবাসে না, এমন ব্যক্তির কাছে কোনো স্বপ্নের কথা বলা যাবে না। কারণ সে ভাল স্বপ্নটির একটি খারাপ ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়ে দিতে পারে।
স্বপ্ন ব্যাখ্যা করা খুবই কঠিন কাজ। জ্ঞানতাত্ত্বিক এই বিষয় যে কেউ ইচ্ছা করলেই স্বপ্ন ব্যাখ্যা করতে পারেন না। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত।
আরো পড়ুনঃ নামাজ না পড়ার ১৫ টি শাস্তি - নামাজ না পড়ার শাস্তি
স্বপ্নের কথা যাদেরকে বলা যাবে না
৩ ধরনের ব্যক্তির কাছে আপনার স্বপ্নের কথা বলবেন না। তারা হলো-
- অমুসলিম
- অজ্ঞ ব্যক্তি
- শত্রুর কাছে স্বপ্নের কথা না বলা
১. অমুসলিম
আপনি একজন মুসলিম হয়ে কখনো একজন অমুসলমান ব্যক্তির কাছে আপনার স্বপ্নের ব্যাখ্যা চাইবেন না বা স্বপ্নের কথা বলবেন না। কেননা সে ব্যক্তি ইসলামের আলোকে আপনার স্বপ্নের সঠিক ব্যাখ্যা দিতে সক্ষম নয়। তাই আপনার স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানতে চাইলে আপনাকে এমন কোনো মুসলিম জ্ঞানী ব্যক্তির কাছে যেতে হবে যার আল্লাহর প্রতি অগাধ আস্থা ও বিশ্বাস আছে এবং স্বপ্ন সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান আছে। কেননা স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য যে কোনো সুসংবাদ কিংবা দুঃসংবাদের ইঙ্গিত স্বরূপ।
২. অজ্ঞ ব্যক্তি
সকল শিক্ষিত মানুষ জ্ঞানী হয় না। তাই জ্ঞানের গভীরতা নেই এমন ব্যক্তির কাছে স্বপ্নের কথা বলা যাবে না। কোনো অজ্ঞ ব্যক্তির কাছে স্বপ্নের কথা বলা যাবে না। তবে এমন অনেক ব্যক্তি রয়েছেন যাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই তবুও তাদের পরিপূর্ণ জ্ঞান ও প্রজ্ঞার আছে। তাদের কাছে স্বপ্নে কথা বলা যেতে পারে।
৩. শত্রুর কাছে স্বপ্নের কথা না বলা
পরিস্থিতি যদি এমন হয় যে আপনার শত্রু অনেকে জ্ঞানের অধিকারী তবে তার কাছে কখনো আপনার স্বপ্নের ব্যাখ্যা নিতে যাবেন না। কেননা সে যদি শত্রুতাবসত আপনার স্বপ্নের প্রকৃত ব্যাখ্যা জানা সত্ত্বেও মিথ্যা ব্যাখ্যা করে এতে আপনার ক্ষতি হতে পারে।
মূল কথা কথা হলো
স্বপ্নে ভালো কিংবা মন্দ যেটাই ইঙ্গিত বহন করুক না কেন, যদি এর ব্যাখ্যা ভালো হয়, তবে সে ব্যক্তি স্বপ্নে দেখা অনিষ্টতা থেকে বেঁচে যায়। সুতরাং স্বপ্নের ব্যাখ্যা বা ইঙ্গিত জানার জন্য প্রকৃত জ্ঞানী ও আল্লাহভিরু লোকদের কাছে যাওয়াই উচিত।
আরো পড়ুনঃ আল আকসা মসজিদ কোথায় অবস্থিত
স্বপ্নে নামাজ পড়তে দেখলে কি হয়
মুমিন ব্যক্তিকে আল্লাহ তায়ালা অনেক সময় স্বপ্নের মাধ্যমে সতর্ক করেন। আবার স্বপ্ন কখনো শয়তানের পক্ষ থেকেও হতে পারে। স্বপ্নের মাধ্যমে আল্লাহ বান্দাকে অনেক ধরনের বার্তা দিয়ে থাকেন। ঘুমানোর পর নিজেকে স্বপ্নে নামাজ পড়তে দেখছেন। তাহলে আপনার এই স্বপ্নটা অনেক ভালো। হয়তো মহান আল্লাহ তায়ালা আপনাকে কিছু বোঝাতে চাচ্ছেন।
যদি কেউ স্বপ্নে পশ্চিম দিকে নামাজ পড়তে দেখে তাহলে সে ধর্মের দিক দিয়ে উদাসীন হয়ে আছে। আর এই স্বপ্নের মাধ্যমে তাকে সতর্ক করা হচ্ছে।
যদি আপনি বেনামাজি হয়ে থাকেন তাহলে হয়তো মহান আল্লাহ তায়ালা স্বপ্নে নামাজ পড়া দেখানোর মাধ্যমে আপনাকে এটি জানাতে চাইছেন যে আপনি নামাজ পড়েন। মহান আল্লাহ তায়ালা আপনাকে এই বার্তা দিতে চাইছেন। যাতে আপনি ভালো হয়ে যান এবং ইসলামের পথে চলেন।
অর্থাৎ স্বপ্নে নামাজ পড়তে দেখলে আপনার এ বিষয়ে মনোযোগী হওয়া দরকার। যদি আপনার নামাজ কাজা হয়ে থাকে তবে তা আদায় করে নিন। আর যদি নামাজ নিয়মিত না পড়ে থাকেন, নিয়মিত আদায় করুন।
আবার এমনও হতে পারে যে আপনি নিয়মিত নামাজ পড়েন না। অর্থাৎ আপনি সালাতকে তেমন কোনো গুরুত্ব দেন না। তাই হয়তো স্বপ্নে নিজেকে নামাজ পড়তে দেখেছেন। তার মানে মহান আল্লাহ আপনাকে সতর্ক দিচ্ছেন যে আপনি নিয়মিত নামাজ পড়েন না। আপনাকে নামাজে নিয়মিত হতে হবে।
যদি কেউ স্বপ্নে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতে দেখে তবে তার জীবনে রহমত এবং সুখ নেমে আসেব। যদি কেউ স্বপ্নে শুয়ে নামাজ পড়তে দেখেন তাহলে তার মনে করতে হবে যে তার মৃত্যু খুব কাছাকাছি এসে গেছে। যদিও এক্ষেত্রে একমাত্র মহান আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন।
যদি কেউ স্বপ্নে বসে নামাজ পড়তে দেখেন তাহলে তার দ্রুতই রোগাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদি কেউ স্বপ্নে পূর্ব দিকে ফিরে নামাজ আদায় করতে দেখেন তাহলে তার উপর যদি হজ্ব ফরজ হয়ে থাকে তাহলে হজ্ব করে নেওয়া উত্তম।
যদি কেউ স্বপ্নে দেখে যে সে কোনও বড় জামাতের সাথে অর্থাৎ বিশাল জামাতবদ্ধভাবে নামাজ আদায় করছে তাহলে তার নিকট মহান আল্লাহ তায়ালার রহমত অবারিত পড়তে থাকে।
আর যদি স্বপ্নে নিজেই নামাজে ইমামতি করতে দেখেন তবে জাতীয় নেতৃত্ব লাভ করার সম্ভাবনা থাকে। এসকল ব্যাখ্যা হলো সম্ভাবনাময় ব্যাখ্যা। এসব বিষয়ে সুনিশ্চিত ভাবে একমাত্রই আল্লাহ তায়ালা বলতে পারেন।
মুমিন ব্যক্তিগণকে পৃথিবীতে মহান আল্লাহ তায়ালা তাদের সুসংবাদ পাঠিয়ে দেন। আখেরাতেও তাদের জন্য সুসংবাদ অপেক্ষা করছে এবং দুনিয়াতেও রয়েছে। অনেক সময় তাদের জন্য দুনিয়াতে যেসব সুসংবাদ রয়েছে তারা স্বপ্নের মাধ্যমে জানতে পারে।
সুতরাং স্বপ্নে নামাজ পড়তে দেখলে কি হয় আশা করি আজ আপনারা তা বুঝতে পেরেছেন। আমার পরামর্শ থাকবে স্বপ্নের ব্যাখা জানার জন্য একজন জ্ঞানী, বিজ্ঞ আলেমের সাথে যোগাযোগ করা এতে করে তিনি আপনাকে এই বিষয়ে সঠিক পরামর্শ দিতে পারবেন।
স্বপ্নে মহানবীকে দেখলে কি হয়
বুখারী ও মুসলিম হাদিস শরীফের একটি হাদিসে বর্ণিত রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: যে নিদ্রার মধ্যে আমাকে দেখে সে যেন বাস্তবেই আমাকে দেখেছে। কারণ, শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না। (বুখারি ও মুসলিম)
এ হাদিস থেকে আমরা জানলাম, যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে স্বপ্নে দেখবে সে সত্যিই তাকে দেখেছে।
ভালো বা খারাপ স্বপ্ন সম্পর্কিত হাদিস
আবু সায়ীদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন: তোমাদের কেউ যদি এমন স্বপ্ন দেখে যা সে পছন্দ করে, তাহলে জানবে যে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে দেখানো হয়েছে। তখন সে যেন আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করে ও অন্যদের কাছে বর্ণনা করে। এবং অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, এ স্বপ্নের কথা শুধু তাকে বলবে, যে তাকে ভালোবাসে।
আবু কাতাদাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবি কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: সুন্দর স্বপ্ন আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে হয়ে থাকে আর খারাপ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে। কেউ স্বপ্নে খারাপ কিছু দেখলে বাম পাশে তিনবার থুথু নিক্ষেপ করবে আর শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করবে। ( এভাবে বলবে, আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম) তাহলে এ স্বপ্ন তাকে ক্ষতি করতে পারবে না। (বর্ণনায় : বুখারি ও মুসলিম)
ভালো বা খারাপ স্বপ্ন দেখলে করণীয়
এ হাদিস থেকে আমরা জানলাম; ভালো স্বপ্নগুলো, আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। আর খারাপ স্বপ্ন শয়তানের কুমন্ত্রণা ও প্রভাবের কারণে আমরা দেখে থাকি।
ভাল স্বপ্নগুলো দেখলে এমন কোন ব্যক্তির কাছে আমাদের বলতে হবে যারা আমাদের ভালোবাসে। আমাদের ভালোবাসে না অথবা আমাদের হিংসা করে এমন কোন ব্যক্তিকে আমাদের স্বপ্নের কথা বলা উচিত নয়।
ভাল স্বপ্ন দেখলে আলহামদুলিল্লাহ বলে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করা উচিত। অন্যদিকে খারাপ স্বপ্ন দেখলে আউজুবিল্লাহ বিল্লাহিমিনাশ শাইতানির রাজীম বলা উচিত।
আরো পড়ুনঃ দ্রুত বিয়ে ও উত্তম জীবনসঙ্গী পাওয়ার আমল
স্বপ্ন সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা
এক মহিলা একটি দুগ্ধপোষ্য শিশুকে নিয়ে ইমাম ইবনে সীরিন রহ.-এর শিক্ষা মজলিসে এসেছিল। এসে তিনি ইমামের ছাত্রদের কাছে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ইমাম সাহেব কোথায়? ইমাম সাহেবের একজন বোকা ছাত্র বলেছিল, আপনি তার কাছে কেন এসেছেন? মহিলাটি বলেছিলেন, আমি আমার ছেলের ব্যাপারে একটি স্বপ্ন দেখেছি, তার ব্যাখ্যা জানার জন্য এসেছি।
ছাত্রটি বলেছিল, কি স্বপ্ন দেখেছেন? মহিলাটি বলল, আমি দেখেছি আমার এ ছেলেটি সাগর থেকে পানি পান করছে। ছাত্রটি তৎক্ষণাৎ ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছিল, তাহলে তো সে পেট ফুলে মারা যাবে। তৎক্ষণাৎ শিশুটির পেট ফুলে উঠল। আর চিৎকার করে মারা গেল। মহিলাটি কান্না শুরু করল।
এরই মধ্যে ইমাম সাহেব এসে পড়েছিলেন। ঘটনা শুনে তিনি বলেছিলেন: যদি তুমি স্বপ্নের ব্যাখ্যা না করে ছেড়ে দিতে তাহলে ছেলেটি এ দেশের সবচেয়ে বড় আলেম ও বিদ্যান হত। সাগরের অর্থ শুধু পানের অযোগ্য নোনা পানিই নয়। সাগরের ব্যাখ্যা হল, মনি, মুক্তা, হীরা, প্রবাল।
কাজেই যিনি স্বপ্নের ব্যাখ্যা করবেন তিনি সব সময় ইতিবাচক ও কল্যাণকর ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করবেন। (আল কাওয়ায়েদুল হুসনা ফী তাবীলির রুইয়া : শায়খ আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আস সাদহান)
অনেকেই স্বপ্নে নামাজ দেখার পর এর বিভিন্ন ব্যাখ্যা করে থাকেন যেমন-
স্বপ্নে জামায়াতে নামাজ পড়তে দেখলে কি হয়
অনেকের মতে কেউ যদি স্বপ্নে দেখে যে সে কোন বড় জামাতের সাথে নামাজ পড়ছে তাহলে তার নিকট আল্লাহর রহমত অবারিত পড়তে থাকে।
স্বপ্নে বসে নামাজ পড়তে দেখলে কি হয়
যদি কেউ স্বপ্নে বসে নামাজ পড়তে দেখে তাহলে সে দ্রুতই রোগাক্রান্ত হবে।
স্বপ্নে শুয়ে নামাজ পড়তে দেখলে কি হয়?
যদি কেউ শুয়ে নামাজ পড়তে দেখে থাকে তাহলে মনে কর হয় যে যে তার মৃত্যু খুব শীঘ্রই আসবে।
এগুলো নিছক ধারণা মাত্র। তাই স্বপ্নের নামাজ পড়ার বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিকে গুরুত্ব না দিয়ে ইবাদতের প্রতি নামাজের প্রতি মনোনিবেশ করা উচিত।
আরো পড়ুনঃ জুমার দিনের আমল - জুমার দিনের ১১ টি আমল
পরিশেষে
আমাদের মধ্যে অনেকেরই একটা প্রবণতা রয়েছে যে কোন স্বপ্ন দেখলে কি হয় তা জানা। আমরা অনেকেই স্বপ্নে নামাজ পড়তে দেখি যেমন; স্বপ্নে বসে নামাজ পড়তে দেখলে কি হয়, দাড়িয়ে নামাজ পড়তে দেখলে কি হয়, স্বপ্নে শুয়ে নামাজ পড়তে দেখলে কি হয়, জামাতে নামাজ পড়তে দেখলে কি হয়, স্বপ্নে অন্য কাউকে নামাজ পড়তে দেখলে কি হয়, অথবা অন্য কোন স্বপ্ন যেমন- স্বপ্নের সাপ দেখলে কি হয়, স্বপ্নে বড়ই গাছ দেখলে কি হয় এই নিয়ে অনেকেই ব্যাখ্যার খোঁজে থাকি। বিভিন্ন মানুষের কাছে ব্যাখ্যা চাই।
কিন্তু এটা করে সময় নষ্ট করার কোন দরকার নেই। আপনি যখন একটা স্বপ্ন দেখছেন তখন তো আপনার বিবেক বলে দিচ্ছে স্বপ্নটা কোন ধরনের। এটা আপনার দৈনন্দিন জীবনের কোন স্বাভাবিক ঘটনা নাকি এটা কোনো ভালো স্বপ্ন নাকি খারাপ স্বপ্ন।
ভালো স্বপ্ন যদি আসে তাহলে বুঝবেন এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে তাহলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের বেশি বেশি প্রশংসা করবেন তার কাছে দোয়া করবেন।
আর যদি ঘুমের মধ্যে খারাপ স্বপ্ন দেখেন তাহলে বুঝবেন এটা শয়তানের পক্ষ থেকে এসেছে। এই অবস্থায় বাম পাশে তিনবার থুতু ফেলে আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম বলবেন এবং ডান কাতে শুয়ে পড়বেন। পরবর্তীতে নামাজে সময় এবং অন্যান্য সময় সব সময় আল্লাহর কাছে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে মুক্তর জন্য এবং বেশি বেশি দোয়া করবেন তাহলে এই ধরনের খারাপ স্বপ্ন দেখা থেকে রেহাই পাবেন। পাশাপাশি আমাদের ওয়েবসাইট থেকে আরো পড়তে পারেন আতরের নামের তালিকা - আতরের নাম ও দাম, ফি আমানিল্লাহ অর্থ কি | ফি আমানিল্লাহ কখন বলতে হয়।
আর্টিকেল সম্পর্কিত তথ্য জানতে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।