অনেক সময়ে আমাদের সার্টিফিকেটে নিজের নাম অথবা পিতা-মাতার নাম ভুল ভাবে আসে। এক্ষেত্রে সার্টিফিকেট সংশোধন করতে হবে। যদি সার্টিফিকেট সংশোধন না করা হয় তবে আপনি কোনো স্থানে সেটা ব্যবহার করতে পারবেন না। যদিও পারেন তবে তা পরবর্তী ক্ষেত্রে ভুল থেকেই যাবে।
মূলত অনলাইনের মাধ্যমে বর্তমানে JSC, SSS ও HSC সার্টিফিকেটের ভুল খুব সহজেই সংশোধন করতে পারবেন। সার্টিফিকেট সংশোধন করার জন্য দুটি মাধ্যম রয়েছে। আপনার কাছে যে মাধ্যমটি সহজ হবে সেটা অনুযায়ী কাজ করতে পারেন।
আপনি যদি জানতে চান ২০২৪ সালে কিভাবে আপনি আপনার সার্টিফিকেট সংশোধন করবেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকের লেখায় আমরা জানাবো কিভাবে আপনারা অনলাইনে অথবা অফলাইনে নিজের সার্টিফিকেট সংশোধন করে নিতে পারবেন। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক।
(toc) #title=(পোষ্ট সূচিপত্র)
সার্টিফিকেট সংশোধন করার নিয়ম ২০২৪
আমরা পূর্বেই বলেছি সার্টিফিকেট সংশোধন এর জন্য দুটি মাধ্যম রয়েছে যেগুলো হলো অনলাইনে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ও অফলাইনের মাধ্যমে। যদি আপনি অফলাইনের মাধ্যমে সার্টিফিকেট সংশোধন করতে চান তাহলে আপনার নির্ধারিত বোর্ডের অফিসে যেতে হবে। যদি আপনার মাদ্রাসা বোর্ড হয় তবে মাদ্রাসা বোর্ডে যেতে হবে। আপনার যদি ঢাকা বোর্ড হয় তবে ঢাকা বোর্ড অফিসে যেতে হবে।
তবে আপনি যদি অফিসে যাওয়ার ঝামেলায় না যেতে চান তবে অনলাইনের মাধ্যমে খুব সহজেই সার্টিফিকেট সংশোধন করতে পারবেন। ঘরে বসে আপনার মোবাইল অথবা কম্পিউটারের মাধ্যমে আবেদন করলে কয়েক কার্যদিবসের মধ্যে আপনার সার্টিফিকেট সংশোধন হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন : সার্টিফিকেট তোলার আবেদন | সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে করণীয়
অনলাইনে সার্টিফিকেট সংশোধন করতে কি কি লাগে
অনলাইনে সার্টিফিকেট সংশোধন করার জন্য আপনার কাছে বেশ কিছু ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হবে। যেগুলো হলো –
- নির্ধারিত বোর্ড এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট
- পিসি অথবা মোবাইল সহ ভালো ইন্টারনেট কানেকশন
- এসএসসি রোল ও রেজিস্ট্রেশন
- প্রতিষ্ঠানের EIIN ও পাসওয়ার্ড
- জন্ম নিবন্ধন সনদ
- জাতীয় পরিচয়পত্র যদি থাকে
অনলাইনে সার্টিফিকেট সংশোধন করার নিয়ম
অনলাইনে সার্টিফিকেট সংশোধন করার জন্য আপনাকে এডুকেশন বোর্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে। এরপর সেখানে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য দিয়ে আবেদন করে সার্টিফিকেট সংশোধন করতে পারবেন। আবেদন প্রক্রিয়া কিভাবে করবেন বিস্তারিত নিচে আমরা ধাপে ধাপে আলোচনা করে দিলাম –
#১ম ধাপ
সবার প্রথমে আপনাকে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। আপনার মোবাইল অথবা কম্পিউটার থেকে Education Board Dhaka লিখে গুগলে সার্চ করুন। সবার প্রথমে যে ওয়েবসাইটটি আসবে সেখানে প্রবেশ করুন। প্রবেশ করার নিচের ছবির মত একটি ইন্টারফেস দেখতে পাবেন। অথবা আপনি চাইলে এখানে ক্লিক করে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারবেন।
উল্লেখ্য- যদি আপনার বোর্ড ঢাকা হয় তবে ঢাকা বোর্ডের ওয়েবসাইট ব্যবহার করবেন। মাদ্রাসা বোর্ড হলে মাদ্রাসার ওয়েবসাইট। পর্যায়ক্রমে কুমিল্লা, বরিশাল, রাজশাহী ইত্যাদির জন্য নিজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইটে ঢুকবেন।(alert-success)
আরও পড়ুন : সোশ্যাল মিডিয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
#২য় ধাপ
নির্ধারিত অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পরে এবার আপনাকে আবেদন করতে হবে। আবেদন করার জন্য “Online Application” অপশনে ক্লিক করে দিন।
#৩য় ধাপ
এবার একটি নতুন ফর্ম আপনাদের সামনে ওপেন হবে। এখান থেকে দ্বিতীয় অপশন বাছাই করে দিন “নাম ও বয়স সংশোধন আবেদন” এখানে ক্লিক করে পরের ধাপে যান।
#৪র্থ ধাপ
এই ধাপে আপনাকে আপনার প্রতিষ্ঠানে যেতে হবে। সেখান থেকে আপনাকে প্রতিষ্ঠানের EIIN নাম্বার ও পাসওয়ার্ড সংগ্রহ করে আপনাকে আবেদন করতে হবে। তবে অনেক প্রতিষ্ঠান আপনাকে EIIN নাম্বার প্রদান করবে না। সেক্ষেত্রে আপনাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সার্টিফিকেট সংশোধন এর জন্য আবেদন করতে হবে।
#৫ম ধাপ
যদি আপনার কাছে EIIN নাম্বার থাকে তাহলে সেটা দিয়ে এখানে লগ ইন করার পর আপনার এসএসসি রোল ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস প্রদান করে সার্টিফিকেট সংশোধন এর জন্য আবেদন করতে হবে।
সার্টিফিকেট সংশোধন কিভাবে করবেন
অনেকের কাছেই প্রতিষ্ঠানের EIIN নাম্বার ও পাসওয়ার্ড থাকে না। প্রতিষ্ঠানের বিশেষ কেউ না হলে কারো কাছেই এটা থাকে না। তাই আপনি চাইলেও নিজে নিজেই সার্টিফিকেট সংশোধন এর জন্য আবেদন করতে পারবেন না। এজন্য আপনাকে নিজ প্রতিষ্ঠানে যেতে হবে।
যদি তারা উক্ত নাম্বার ও পাসওয়ার্ড না দেয় তবে তাদের মাধ্যমে সার্টিফিকেট সংশোধন এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। যেহতু অফিসিয়াল ভাবে শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে নিজে থেকে আবেদন প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়েছে তাই আপনার নিজ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আবেদন করা সবচেয়ে সুবিধাজনক হবে।
আরও পড়ুন : Ielts ছাড়া ইউরোপের কোন কোন দেশে যাওয়া যায়
তবে আপনি চাইলে ফর্ম পূরণ করে সার্টিফিকেট সংশোধন এর জন্য আবেদন করতে পারেন। ফর্ম পূরণ এর ক্ষেত্রে নিয়ম হলো –
- শিক্ষার্থীর নাম সার্টিফিকেটে যেভাবে লেখা আছে।
- শিক্ষার্থীর পিতা ও মাতার নাম
- শিক্ষার্থীর ঠিকানা
- প্রতিষ্ঠানের নাম
- একাডেমিক পর্যায় সিলেক্ট করা – JSC/SSC/HSC
- সংশোধন করা নাম
- নাম সংশোধন করার কারন
- প্রতিষ্ঠান প্রদানের স্বাক্ষর
উপরের সব কিছু সঠিক ভাবে দিয়ে ফর্ম পূরণ করতে হবে। তবে ফর্মের সাথে যেসব ডকুমেন্টস প্রমান স্বরুপ দিতে হবে সেগুলো হলো –
নাম সংশোধনের জন্য ৫০০ টাকা বোর্ড ফি সোনালি ব্যাংকের মাধ্যমে প্রদান করে পেমেন্ট এর রসিদ ফর্মের সাথে যুক্ত করতে হবে।
২০০ টাকার নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে পিতার মাধ্যমে ১ম শ্রেণির অফিসারের মাধ্যমে নাম সংশোধনের ব্যাপারে এফিডেভিট করে মূল কপি যুক্ত করে দিতে হবে।
নাম সংশোধনের জন্য যেকোনো দৈনিক পত্রিকার বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে।
JSC, SSC, HSC সার্টিফিকেট বা মার্কশিটের সত্যায়িত কপি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ১ কপি সত্যায়িত ছবি।
জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্ম সনদ।
আবেদন এর ক্ষেত্রে মূল কাগজপত্র সাথে নিতে হবে।
যোগাযোগ নাম্বার।
নিচের ছবি থেকে ফর্ম পূরণ এর মাধ্যমে সার্টিফিকেট সম্পূর্ণ বিস্তারিত নিয়ম দেখে নিতে পারেন –
FAQ - জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
সার্টিফিকেট সংশোধন এর উপায়?
আপনি যে ধরণের সার্টিফিকেট সংশোধন করেন সেটার উপরে ভিত্তি করে নির্ধারিত বোর্ডে অথবা প্রতিষ্ঠানে যেতে হবে।
সার্টিফিকেট সংশোধন করতে কত টাকা লাগে?
বর্তমানে বোর্ডে ৫০০ টাকার মাধ্যমে সার্টিফিকেট সংশোধন করা যাবে।
অনলাইনে কি সার্টিফিকেট সংশোধন করা যায়?
অনলাইনে সার্টিফিকেট সংশোধন করা যায় তবে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। যদি আপনার কাছে EIIN নাম্বার ও পাসওয়ার্ড থাকে তবে প্রতিষ্ঠানের হয়ে আপনি সার্টিফিকেট সংশোধন করতে পারবেন।
সার্টিফিকেট সংশোধন করতে কত দিন লাগে?
সার্টিফিকেট সংশোধন এর আবেদন করার পরে কয়েক কার্যদিবসের মধ্যেই সার্টিফিকেট সংশোধন হয়।
আরও পড়ুন : বাংলাদেশের সেরা ১০ ঔষধ কোম্পানি ২০২৪
আমাদের শেষ কথা
আজকের লেখায় আমরা জানালাম কিভাবে সহজে সার্টিফিকেটের ভুল সংশোধন করা যায়। সার্টিফিকেট সংশোধন করা অনেক জরুরি। যে কোনো সময়ে আপনার সার্টিফিকেট ব্যবহার করা লাগতে পারে সেক্ষেত্রে সার্টিফিকেটে নাম অথবা অন্য কোনো ভুল থাকলে সার্টিফিকেট দিয়ে কাজ করতে পারবেন না। আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।