আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন করার নিয়ম | আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

অনেকেই আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে জানতে চান। বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষ আয়ারল্যান্ডে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে থাকে। বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে কাজের ভিসা সহজে পাওয়া যাচ্ছে। সরকারি কিংবা বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যেমে আপনারা আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে পারেন।

তবে সঠিক পদ্ধতি এবং আয়ারল্যান্ড এর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে কত টাকা খরচ হতে পারে এই সমন্ধে জানা না থাকার কারণে অনেকেই আয়ারল্যান্ডে যেতে পারছেন না।

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ, আজকে আমি আপনাদের সাথে আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সমন্ধে বিস্তারিত সকল তথ্য জানানোর চেষ্টা করব। তাই আপনি এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

(toc) #title=(সুচিপত্র)

আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে কিছু কথা

বাংলাদেশের অনেক নাগরিক ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে আয়ারল্যান্ডে যেতে চায়, কিন্তু সঠিক পদ্ধতি না জানার কারণে অনেকেই যেতে পারে না। বাংলাদেশের সরকারি কিংবা বেসরকারি এজেন্সিগুলোর মাধ্যেমে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা গেলেও অনেক ভুয়া এজেন্সি রয়েছে তাদেরা দ্বারা সাধারণ মানুষ প্রতারিত হয়।

তাই আজকে মূলত আমরা জানব, আয়ারল্যান্ডের কাজের ভিসা কিভাবে পাবেন, বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে কাজের বেতন কত টাকা প্রদান করা হয়,আয়ারল্যান্ডের ভিসা খরচ কত টাকা, আয়ারল্যান্ডের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কিভাবে করা হয়,আয়ারল্যান্ডে যেতে কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয় এসব বিষয় আপনারা এই পোস্টটিতে জানতে পারবেন।

আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ কত

আপনারা অনেকেই জানতে চান আয়ারল্যানন্ডের ভিসা খরচ কত টাকা এই ব্যাপারে। আপনি যদি আয়ারল্যান্ড দেশটিতে যেতে চান তবে আপনার খরচ হতে পারে ২ লক্ষ টাকা থেকে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এটি যদি আপনি নিজে সব কিছু প্রসেসিং করেন অথবা আয়ারল্যান্ডের কোন এজেন্সির মাধ্যেমে প্রসেসিং করেন তবেই এই পরিমাণ টাকা খরচ হবে।

আর আপনি যদি বাংলাদেশের কোন লোক্যাল এজেন্সির মাধ্যেমে আয়ারল্যান্ডের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করে থাকেন তবে আপনার ৬ থেকে ৭ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। তাছাড়াও আপনি বাংলাদেশ সরকারের এজেন্সির মাধ্যেমেও যেতে পারেন অথবা Bosesl এর মাধ্যেমে যেতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ অনলাইনে ই পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম

আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসাতে গেলে কি কি কাজ করা যায়

আপনারা যারা আয়ারল্যান্ডে আগ্রহী তারা অবশ্যই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চান। আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন আয়ারল্যান্ডে কি কি কাজ করা যায় এই ব্যাপারে। সাধারণত বাংলাদেশী ও বিশ্বের অন্যন্য দেশের শ্রমিকদের জন্য আয়ারল্যান্ডে বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ রয়েছে।

যদি আপনি আয়ারল্যান্ডে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আয়ারল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট ভিসাতে গেলে কি কি কাজ করা যায় এই ব্যাপারে জেনে নিচে কাজগুলো উল্লেখ করা হলোঃ

  • কন্সট্রাকশনের কাজ 
  • শাটারিং কারপেটার 
  • স্টীল পিকচার
  • ইলেক্ট্রেশিয়ান
  • কম্পিউটার অপারেটর
  • প্লাম্পার
  • ফ্লোর ম্যান 
  • ইলেক্ট্রিক্যাল
  • ইঞ্জিনিয়ারিং
  • রেস্টুরেন্ট

সাধারণত উপরের কাজগুলো আপনারা আয়ারল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে কাজ করতে পারবেন। এবং ভালোমানের বেতন পাবেন। উপরের কাজগুলো ছাড়াও আরও অনেক ধরনের কাজ আছে যেগুলো আয়ারল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট ভিসাতে গেলে করা যাবে। তবে আপনি ইলেক্টিক্যাল অথবা ইলেক্ট্রিশিয়ান কাজের জন্য যান তাহলে অবশ্যই আপনার সার্টিফিকেট থাকতে হবে।

আরো পড়ুনঃ মালয়েশিয়া মেডিকেল রিপোর্ট চেক করার নিয়ম

আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

যদি আপনি আয়ারল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চান তবে আপনার বেশ কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট এবং কাগজপত্র প্রয়োজন হবে। আয়ারল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে তা নিচে উল্লেখ করা হলো।

  • আবেদনকারীর একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে
  • আবেদনকারীর যদি কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে থাকেন তাহলে সেক্ষেত্রে চাকরির অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে
  • আবেদনকারীর সদ্য তোলা রঙিন দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রয়োজন হবে 
  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
  • আবেদনকারীর একটি সচল মোবাইল নাম্বার 
  • আবেদনকারীর শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট 
  • আবেদনকারীর পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট 
  • আবেদনকারীর কোভিড-১৯ এর সার্টিফিকেট 
  • আবেদনকারীর মেডিকেল সার্টিফিকেট

সাধারণত আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে হলে এসব ডকুমেন্টের প্রয়োজন হবে। তবে আপনি যে প্রতিষ্ঠানে ভিসার জন্য এপ্লিকেশন করছেন সেই প্রতিষ্ঠান যদি মনে করে ক্ষেত্র বিশেষে আপনার কাছে আরও বেশ কয়েকটি প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দিতে বলতে পারে।

তাই আপনারা যারা আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চাচ্ছেন তারা আগে থেকেই এসব প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র ও ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে রাখবেন।

আরো পড়ুনঃ সৌদি মেডিকেল রিপোর্ট চেক অনলাইন – মেডিকেল রিপোর্ট চেক সৌদি

অনলাইনে আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন করার নিয়ম

আপনারা যারা আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে চান আপনাদের অনলাইনের মাধ্যেমে সকল আবেদন প্রসেস কমপ্লিট করতে হবে। অনলাইনে আবেদন করার জন্য সর্ব প্রথম তাদের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। এবং একটি ফরম পূরণ করতে হবে। সেখানে আপনার নাম, জন্ম তারিখ সহ ব্যক্তিগত সকল প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করে সাবমিট দিতে হবে।

আপনি চাইলে এজেন্সির মাধ্যেমেও এই কাজগুলো করে নিতে পারেন। তারাই আপনাকে সব কিছু করে দিবে। এরপর যদি আপনি সিলেক্ট হন তবে আপনাকে ভাইভার জন্য ডাকা হবে।

এরপর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এম্বাসিতে জমা দিলে কিছু প্রসেস কমপ্লিট হয়ে গেলে আপনি আয়ারল্যান্ড এ যেতে পারবেন। তবে আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা হাতে পাওয়ার পর অবশ্যই অনলাইনে একবার চেক করে নিবেন।

আয়ারল্যান্ড কাজের বেতন কত টাকা

যদি আপনি আয়ারল্যান্ড এ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চান তাহলে আপনি নিশ্চয়ই জানতে চাইবেন আয়ারল্যান্ড কাজের বেতন কত এই সমন্ধে। আয়ারল্যান্ড মাসিক বেতন কত টাকা এটি নির্ভর করছে আপনি সেখানে কি কাজ করছেন। তবে জেনে খুশি হবেন, এখানে প্রত্যেক কাজের বেতন অনেক বেশী থাকে।

যার কারণে প্রতি বছর বিভিন্ন দেশের মানুষ এদেশে আসতে অনেক আগ্রহী হচ্ছে। আপনি বাংলাদেশী টাকায় ৫০ হাজার টাকা থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত এখানে আয় করতে পারবেন। এখানে ইলেক্টিক্যাল অথবা ইলেক্ট্রিশিয়ান ও ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন সব থেকে বেশী থাকে। আশা করি আপনার প্রশ্নের উত্তর-টি আপনি খুঁজে পেয়েছেন।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ

আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এই সমন্ধে আপনার মনে বেশ কিছু প্রশ্ন উঁকি দিতে পারে। তবে চলুন জেনে নেই সেই সমস্ত সকল প্রশ্নের উত্তর।

বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ডে যেতে কত টাকা লাগবে?

বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ডে যেতে কত টাকা লাগতে পারে এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আপনি কোন ধরনের ভিসা নিয়ে যাবেন। যদি আপনি বাংলাদেশের লোক্যাল এজেন্সির মাধ্যেমে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চান তবে আপনার ৬ লক্ষ থেকে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

বাংলাদেশিরা আয়ারল্যান্ডে কি কাজ করতে পারে?

বাংলাদেশের নাগরিক সহ বিশ্বের অন্যন্য দেশের শ্রমিকেরা আয়ারল্যান্ডে কন্সট্রাকশনের কাজ, শাটারিং কারপেটার, স্টীল পিকচার, ইলেক্ট্রেশিয়ান, প্লাম্পার, ফ্লোর ম্যান সহ সব ধরনের কাজের সুযোগ পাবেন। 

উপসংহার

বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অনেক দেশের মানুষ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে আয়ারল্যান্ডে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে থাকে। কিন্তু উপযুক্ত তথ্য না জানা থাকার কারণে তারা যেতে পারে না।

তাই আজকে আমি আপনাদের সাথে আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। যদি এই পোস্টটি আপনার কাছে তথ্যবহুল মনে হয় তবে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন।

About sohansumona000@gmail.com

Check Also

ট্রাফিক আইন জরিমানা মোটরসাইকেল ২০২৫: জেনে নিন সব কিছু

বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে বাংলাদেশ সরকার নতুন ট্রাফিক আইন প্রবর্তন করেছেন। বিশেষ করে যারা ট্রাফিক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *