টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির সাপ্লিমেন্ট

টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির সাপ্লিমেন্ট সম্পর্কে জানতে চান অনেকেই। টেস্টোস্টেরন অ্যান্ড্রোজেন নামক হরমোন শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। এটি পুরুষদের অন্ডকোষে এবং মহিলাদের ডিম্বাশয় ও অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিতে সামান্য পরিমাণে উৎপন্ন হয়ে থাকে। টেস্টোস্টেরনকে প্রাথমিকভাবে পুরুষের যৌ*ন হরমোন হিসেবে উল্লেখ্য করা হয়ে থাকে।

কেননা এটি পুরুষের যৌ*ন বিকাশ এবং প্রজননে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। টেস্টোস্টেরন হরমোন অনেক কম পরিমাণে মহিলাদের মধ্যে উপস্থিত থাকে। মানুষ সহ সকল স্তন্যপায়ী প্রাণী, সরীসৃপ এবং পাখির পুরুষের শুক্রাশয় এবং নারীদের ডিম্বাশয়ে এ হরমোন উৎপন্ন হয়ে থাকে।

এটি মূলত হলো পুরুষ হরমোন। টেস্টোস্টেরন পুরুষের যৌ*নাঙ্গের শুক্রাশয় বৃদ্ধি, মাংসপেশি বৃদ্ধি এবং লোম গজাতে সাহায্য করে। পুরুষের মধ্যে টেস্টোস্টেরন বিপাকের হার নারীদের তুলনায় ২০ গুণ বেশি। টেস্টোস্টেরন হরমোন পুরুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আজকে টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির সাপ্লিমেন্ট সম্পর্কে যাবতীয় আলোচনা করা হবে। তাহলে চলুন সময় নষ্ট না করে শুরু করা যাক-

(toc) #title=(সুচিপত্র)

টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির সাপ্লিমেন্ট

টেস্টোস্টেরন হরমোন কি?

টেস্টোস্টেরন মূলত হলো একটি যৌ*ন হরমোন। এটি পুরুষের প্রজনন টিস্যু যেমন লি*ঙ্গ, অন্ডকোষ ইত্যাদি বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া এটি পুরুষের লোম গজাতেও সাহায্য করে থাকে। পুরুষ এবং মহিলা উভয়েই প্রাকৃতিকভাবে টেস্টোস্টেরল উৎপন্ন হয়ে থাকে।

মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের টেস্টোস্টেরন অনেক বেশি উৎপন্ন হয়। পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশিভাগ টেস্টোস্টেরন টেস্টিজ দ্বারা উৎপন্ন হয়ে থাকে। মহিলাদের ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরন ডিম্বাশয় দ্বারা তৈরি হয় এবং তা যৌ*ন হরমোন রূপান্তরিত হয়।

আপনার লি*ঙ্গ, বয়স এবং স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে টেস্টোস্টেরন এর মাত্রা অনেক পরিবর্তিত হতে পারে। টেস্টোস্টেরনের মাত্রা পুরুষদের ক্ষেত্রে ২০ বছর বয়সে সবচেয়ে বেশি থাকে। এরপরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

আরো পড়ুনঃ টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির হোমিও ঔষধ

টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির সাপ্লিমেন্ট

পুরুষদের মধ্যে টেস্টোস্টেরন এর মাত্রা আগের তুলনায় অনেক কম যা আংশিকভাবে অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন দ্বারা প্রভাবিত। ন্যাচারাল কিছু সাপ্লিমেন্ট আছে যা আপনার টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। এগুলো সরাসরি আপনার টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি করতে সক্ষম। নিচে টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির সাপ্লিমেন্ট নিয়ে আলোচনা করা হলো:

১। ডি- এ্যাসপার্টিক এসিড (D-Aspartic Acid) – টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির সাপ্লিমেন্ট

এই সাপ্লিমেন্ট একটিভ ন্যাচারাল অ্যামাইনো এসিড যা কম টেস্টোস্টেরনের মাত্রাকে বাড়াতে সক্ষম। টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির সাপ্লিমেন্ট হিসেবে এটি বেশ জনপ্রিয়। গবেষণায় বলেছে, প্রাথমিকভাবে এটা গ্রন্থি কোষ উদ্দীপক হরমোন এবং গ্রোথ হরমোন বৃদ্ধির কাজে সহায়তা করে থাকে।

এই সাপ্লিমেন্টটি মূলত তাদের জন্য বেশি কার্যকরী যাদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কম এবং যৌ*নকর্মে অদক্ষতা রয়েছে। যাদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা স্বাভাবিক তাদের জন্য এই হরমোন এর প্রয়োজন নেই।

২। টেস্টো ম্যাক্স – টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির সাপ্লিমেন্ট

টেস্টো ম্যাক্স টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির জন্য কার্যকরী একটি সাপ্লিমেন্ট। এতে প্রাকৃতিকভাবে হরমোন বৃদ্ধির জন্য কার্যকরী উপাদান রয়েছে। এতে উপস্থিত রয়েছে মেথির নির্যাস এবং ডি অ্যাসপার্টিক এসিড এর মত উপাদান। যা টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

৩। টেস্টোজেন – টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির সাপ্লিমেন্ট

টেস্টোজেন টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির একটি সাপ্লিমেন্ট। এতে বিভিন্ন কার্যকরী প্রাকৃতিক উপাদানের উপস্থিতি রয়েছে। যেমন মেথি, জিংক এবং অন্যান্য আরো উপাদান। এটি আমাদের শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করে এবং শরীরের শক্তির মাত্রা বাড়ায় পাশাপাশি মেজাজ ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

৪। প্রাইম মেল – টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির সাপ্লিমেন্ট

প্রাইম মেল টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির একটি সাপলিমেন্ট যা মূলত বয়স্ক পুরুষদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এতে নেটল রুট নির্যাস, বায়োপেরিন এর উপস্থিতি রয়েছে যা টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বাড়ায় এবং স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।

আরো পড়ুনঃ টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির উপায়

টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির উপায়

টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই কারণ টেস্টোস্টেরনের জন্য বর্তমানে রয়েছে অনেক চিকিৎসা। অনেক নারী এবং পুরুষ স্বাস্থ্যকর জীবনধারা পরিবর্তন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে। আপনি যদি আপনার টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি করার প্রাকৃতিক উপায় খুঁজছেন, তাহলে আপনি নিম্নের কার্যকর উপায় গুলো দেখতে পারেন-

১। পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিন

টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধির অন্যতম একটি উপায় হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়া। এছাড়াও জৈবিক জীবনের শরীরবৃত্তীয় নানা কার্যক্রমের মধ্যে ঘুম অন্যতম। আপনি যখন ঘুমিয়ে পড়েন আপনার শরীর তখন হরমোন সৃষ্টি করা শুরু করে। মোটকথা আপনার দ্রুত চোখের গতিবিধি যখন শান্ত হয় তখন শরীর সর্বোচ্চ হরমোন উৎপন্ন করতে সক্ষম হয়।

এজন্য আপনি যদি রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে না ঘুমান তাহলে আপনার শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে টেস্টোস্টেরনের হরমোন উৎপন্ন করতে পারবেনা। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, রাতে ৫ ঘন্টা ঘুমানো অর্থাৎ রাত ৮ টার পর ঘুমানো পুরুষদের দেহে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা ১০% থেকে ১৫% কমে যায়। অর্থাৎ আপনি রাতে যত বেশি ঘুমাবেন আপনার শরীরে টেস্টোস্টেরন ততো বৃদ্ধি পাবে।

প্রতিদিন ৯ ঘণ্টা ঘুমানো টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধির অন্যতম উপায়। টেস্টোস্টেরন কমে যাওয়ার কারণ গুলোর মধ্যে ঘুমের সমস্যা, অনিদ্রা, রাত জাগা ইত্যাদি অন্যতম কারণ। আপনার শরীরের শক্তির মাত্রা বাড়াতে এবং টেস্টোস্টেরণ হরমোন বাড়াতে দৈনিক পাঁচ ঘণ্টার বেশি ঘুমানোর চেষ্টা করবেন।

২। দৈনিক ৩০ মিনিট সূর্যের আলো পোহান

আলোর এক্সপোজার আপনার ঘুম আনতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে অন্যদিকে এটি টেস্টোস্টেরনের মাত্রা ও বৃদ্ধি করে থাকে। এছাড়া আলো সরাসরি টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি করতে সক্ষম।

গবেষণা করে দেখা গেছে, যে UVB রশ্মি দিয়ে চিকিৎসা করা ইঁদুরের টেস্টোস্টেরন হরমোন এর মাত্রা বেশি থাকে। এছাড়া সূর্যের আলো আপনার দেহে ভিটামিন ডি এর মাত্রা বাড়ায় যা টেস্টোস্টেরন হরমোন কমার সাথে সাথে বিপরীতভাবে কাজ করে।

একজন মানুষের ত্বকে প্রতিদিন ৩০ মিনিট সূর্যের আলো প্রয়োজন। আপনার পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের জন্য আপনার চোখে আলো পাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তাই বলে সরাসরি সূর্যের দিকে তাকাবেন না, সূর্যের দিকে তাকাতে হলে সানগ্লাস ব্যবহার করবেন। এজন্য টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির জন্য প্রতিদিন সূর্যের আলো পোহানো দরকার।

আরো পড়ুনঃ টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির ট্যাবলেট

৩। আপনার স্ট্রেস লেভেল কমানোর চেষ্টা করুন

উচ্চ স্ট্রেস পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের টেস্টোস্টেরন হরমোন কমায়। এজন্য দেহে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা ঠিক রাখতে আপনার জীবনের দীর্ঘস্থায়ী চাপ কমানোর পাশাপাশি প্রত্যাশিত চাপ কমানোর বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে হবে। আপনাকে রাত জাগিয়ে রাখে এমন উদ্বিগ্ন চিন্তাভাবনা করা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে। মোটকথা আপনি যাতে স্ট্রেস ফিল না করেন সেজন্য সকল পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।

৪। টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির ব্যায়াম

এমন কিছু নেই যে ব্যায়ামের মাধ্যমে ঠিক করা যায় না। যে সমস্ত পুরুষ নিয়মিত ব্যায়াম করে তাদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বসে থাকা পুরুষদের তুলনায় বেশি থাকে। যখন ব্যায়ামের ধরন বাছাই করার কথা আসে তখন অবশ্যই শক্তি প্রশিক্ষণ এবং ভার উত্তোলনের মতো ব্যায়াম বাছাই করে নিন। পুরুষ এবং কখনো কখনো মহিলাদের ভার উত্তোলনের মাধ্যমে সরাসরি টেস্টোস্টেরনের মাত্রা উন্নতি হয়ে থাকে।

কিন্তু এজন্য অতিরিক্ত পরিমাণ ব্যায়াম করবেন না। অনেক ক্ষেত্রে অধিক পরিমাণ ব্যায়াম টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমানোর জন্য দ্বায়ী। গবেষণায় দেখা গেছে সপ্তাহে ৩৫ মাইলের অধিক দৌড়ানো পুরুষ বা মহিলাদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা আগের তুলনায় কমে গেছে।

তবে নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে আপনার প্রতিদিন রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম হবে। ঘুমানোর এক ঘন্টা আগে ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকবেন।

৫। স্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত ডায়েট অনুসরণ করুন

টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির জন্য আপনাকে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাদ্য খেতে হবে। বিভিন্ন চিনি যুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে আপনার টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যেতে পারে। প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত খাবার টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ডালিমের রস, অলিভ অয়েল, পেঁয়াজ ইত্যাদি এই হরমোন বৃদ্ধি করতে পারে।

আরো পড়ুনঃ কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা

৬। সঠিক ওজন রাখুন

একটি স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভাস আপনাকে সঠিক ওজন রাখতে অথবা কমাতে সাহায্য করবে যা আপনার টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধিতেও সাহায্য করবে। সাধারণত BML এর তুলনায় যারা মোটা তাদের মধ্যে টেস্টোস্টেরন ৫০% কম থাকে।

যাদের ওজন বেশি তাদের জন্য উচ্চ প্রোটিন এবং উচ্চ কার্বোহাইড্রেট উভয় ধরনের ডায়েটের সাথে ওজন কমানোর মাধ্যমে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়ানো দেখা গেছে। ওজন কমানোর মাধ্যমে তাদের মাত্রা বাড়তে দেখা গেছে।

৭। অ্যাল কোহল পান করা থেকে বিরত থাকুন

অ্যাল কোহল কখনো কোন মানুষের জন্য সুফল বয়ে আনেনি। যদি আপনি নিয়মিত অ্যাল কোহল পান করেন তাহলে আপনার টেস্টোস্টেরনের মাত্রা দিন দিন কমতে থাকবে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা অতিরিক্ত পরিমাণে মদ্য পান করে তাদের টেস্টোস্টেরন মাত্রা স্বাভাবিক মানুষের তুলনায় কম। এজন্য রাতে ভালোভাবে ঘুমাতে চাইলে ঘুমানোর সময় অ্যাল কোহল পান করা এড়িয়ে চলুন।

৮। মেথি

মেথি আরেকটি খুব জনপ্রিয় ঔষধ এবং টেস্টোস্টেরন বুস্টার। মেথি আমাদের টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির সাপ্লিমেন্ট হিসেবে এটি বেশ জনপ্রিয়। প্রতিদিন ৫০০ মিলিগ্রাম মেথি টেস্টোস্টেরন লেভেল বাড়াতে এবং যৌ*ন শক্তি বৃদ্ধিতে ভালো কাজ দেয়। এটি যুবক, বৃদ্ধ স্বাস্থ্যবান ও স্বাস্থ্যবান সকলের জন্যই উপকারী।

৯। আদা

আদা হচ্ছে মূলত গৃহস্থালি নারীদের রান্না করার একটি সাধারণ মসলা, কিন্তু এটি শত শত বছর ধরে বিকল্প ঔষধ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। আদার বহু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। বিশেষ করে প্রদাহ, জ্বালাপোড়া কমানো এবং টেস্টোস্টেরন জোরদার করার ক্ষেত্রেও এটা খুব ভালো কাজে দেয়। বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে এটি প্রমাণিত হয়েছে।

ইঁদুরের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে এটি টেস্টোস্টেরন লেভেল এবং যৌ*ন শক্তি বৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া এটি মানুষ স্বাস্থ্যের জন্য খুবই নিরাপদ। টেস্টোস্টেরন লেভেল বাড়ানো ছাড়াও এর বহুবিধ উপকারিতা রয়েছে।

আরো পড়ুনঃ কাতিলা গামের উপকারিতা – কাতিলা গাম এর উপকারিতা

১০। ভিটামিন ডি

ভিটামিন ডি হলো মূলত চর্বি দ্রবনীয় ভিটামিন যা সূর্যালোকের উপস্থিতিতে চামড়ার মধ্যে উৎপাদিত হয়ে থাকে। এর সক্রিয় রূপ শরীরে স্টোরয়েড হরমোন হিসেবে কাজ করে। আজকাল খুব বহু সংখ্যক মানুষ তাদের শরীরে সামান্য পরিমাণ রোদ মেখে থাকে যার ফলে তারা ভিটামিন ডি এর সল্পতায় ভুগে। ভিটামিন ডি এর সঞ্চালন আপনার শরীরে টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধি, শুক্রাণুর মনোনয় ইত্যাদি ঘটিয়ে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব রয়েছে তাদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা খুবই কম।

বেশি করে ভিটামিন ডি গ্রহণ করতে হলে শরীরে রোদ লাগান। এছাড়া প্রতিদিন প্রায় 3,000 IU মাত্রায় ভিটামিন D3 সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করুন এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খান।

১১। ট্রিবুলাস টেরেস্ট্রিস

ট্রিবুলাস টেরেস্ট্রিস ক্যালট্রপ পরিবারের অন্তর্ভুক্ত একটি একবর্ষজীবি উদ্ভিদ। এটি প্রায় সারা বিশ্ব জুড়ে পাওয়া যায়। এটি মূলত হলো একটি ঔষধি গাছ যা বছরের পর বছর ধরে যৌ*ন শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে আসছে। যে সকল পুরুষদের উত্থান রোহিতের সমস্যার আছে তাদেরকে ৯০ দিন ট্রিবুলাস টেরেস্ট্রিস পান করতে দিলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে আশা করা যায়।

এই সাপ্লিমেন্ট যৌ*ন স্বাস্থ্যের পাশাপাশি টেস্টোস্টেরন লেভেল ১৬ শতাংশ বাড়িয়ে দিতে সক্ষম। কিন্তু যারা সুস্থমান যুবক এবং যাদের টেস্টোস্টেরন লেভেল ভালো তাদের কোন সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র যাদের টেস্টোস্টেরন লেভেলের ঘাটতি আছে এবং যৌ*ন দুর্বলতা রয়েছে তাদের জন্য এটি প্রযোজ্য।

আরো পড়ুনঃ ভিটামিন ই ক্যাপসুল কোনটা ভালো

টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির সাপ্লিমেন্ট নিয়ে শেষকথা

টেস্টোস্টেরন স্বাভাবিকভাবেই বয়স বৃদ্ধি হওয়ার সাথে সাথে কমতে থাকে কিন্তু চিকিৎসা অবস্থা বা ওষুধের কারণে এর মাত্রাও কমতে পারে। কেউ কম টেস্টোস্টেরন এর উপসর্গের সম্মুখীন হলে অযথা সময় নষ্ট না করে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ঝিনুক, শাকসবজি, চর্বিযুক্ত মাছ, জলপাই তেল ইত্যাদি কিছু খাবার শরীরে টেস্টোস্টেরন এর মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে। ভিটামিন ডি, মেথি, আদা, ট্রিবুলাস টেরেস্ট্রিস,এ্যাসপার্টিক এসিড এই ধরনের সাপ্লিমেন্ট গুলি টেস্টোস্টেরন লেভেল বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

একটি সুষম খাদ্য অনুসরণ করে একজন ব্যক্তি নিশ্চিত করতে পারেন যে তারা সঠিক পুষ্টি পাচ্ছে কিনা। নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং মানসিক চাপ কম করার মাধ্যমে টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধি করা সম্ভব। সবশেষে আমাদের দেহের টেস্টোস্টেরনের গুরুত্ব ভালোভাবে বুঝে আমাদের সকলের উচিত এর সঠিক ব্যবহার করা এবং টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধি করা।

About sohansumona000@gmail.com

Check Also

বিভিন্ন সংক্রমণজনিত রোগের প্রাথমিক চিকিৎসায় ডক্সিক্যাপ ১০০ এর ব্যবহার ও কার্যকারিতা

Doxicap 100 হলো ডক্সিসাইক্লিনের একটি বাণিজ্যিক নাম, যা Tetracycline শ্রেণীর একটি শক্তিশালী ব্রড-স্পেকট্রাম এন্টিবায়োটিক মেডিসিন। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *