তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম – প্রিয় পাঠক আজকেরে আর্টিকেলে আমরা তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আমরা অনেকেই তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তে চাই কিন্তু তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম সম্পর্কে তেমন আমাদের কাছে ধারণা নেই। তার কারণেই তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তে পারি না। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব।

সূচিপত্রঃ তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম

আপনি যদি তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেল সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে আপনি তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন। তো চলুন আজকের মূল আলোচনা শুরু করা যাক।

উপস্থাপনাঃ তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম

তাহাজ্জুদের নামাজ অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। যারা বিনা হিসাবে জান্নাত পাবেন তাদের মধ্যে এক শ্রেণীর মানুষ হলেন তাঁরা যারা যত্নের সাহায্যে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করেন। তাহাজ্জুতের নামাজের এত গুরুত্ব রয়েছে। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করছি।

আরো পড়ুনঃ হুন্ডি ব্যবসা হালাল না হারাম

আপনি যদি এই সর্বোত্তম ইবাদত তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন। তাহলে আশা করি আপনি তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তো চলুন আমাদের আলোচনা শুরু করা যাক।

তাহাজ্জুদ নামাজ কি?

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম সবার আগে আপনাকে তাহাজ্জুদ নামাজ কি এবিষয়ে জানতে হবে। তাহাজ্জুদ শব্দের অর্থ হলো ঘুম থেকে জাগা। তাজত নামাজ হচ্ছে একটি নফল ইবাদত। ফরজ নামাজের পর অন্যান্য সুন্নত ও নফল সব নামাজের মধ্যে তাহাজ্জুতের নামাজের গুরুত্ব এবং ফজিলত সবথেকে বেশি।

যখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ছিলনা তখন আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর ওপর তাহাজ্জুতের নামাজ বাধ্যতামূলক ছিল। তাই তিনি তার জীবনকে কখনো তাহাজ্জুদের নামাজ ছেড়ে দেননি।

তবে আমরা শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর উম্মত হওয়ার কারণে সুন্নতে গায়রে মুয়াক্কাদা অর্থাৎ যদি আপনি নামাজ আদায় করেন তাহলে অসংখ্য নেকি অর্জন করতে পারবেন। আশা করি তাহাজ্জুদ নামাজ কি এ বিষয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম

আমরা সকলেই জানি যে তাহাজ্জুতের নামাজ একটি নফল ইবাদত। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম তাহাজ্জুদ নামাজ দুই রাকাত দুই রাকাত করে আদায় করতেন। তিনি কখনো চার রাকাত তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতেন আবার কখনো আট রাকাত তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতেন।

আবার আপনি যদি মনে করেন আপনি তাহাজ্জুদের নামাজের 2 রাকাত আদায় করবেন তাহলেও হবে। এ বিষয়ে হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ বলেছেন, ” যে ব্যাক্তি এশার নামাজ পর দুই বা তার থেকে অধিক রাকাত নামাজ আদায় করে সে হবে তাহাজ্জুদের ফজিলত কারীর অধিকারী” আপনি তাহাজ্জুদের নামাজে কোন সূরা দিয়ে আদায় করতে পারবেন।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ সব সময় লম্বা কেরাত লম্বা রুকু ও লম্বা সিজদা সহকারে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন। তাই আপনার উচিত হবে যে লম্বা কেরাত অনুযায়ী তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা।

আরো পড়ুনঃ জুমার দিনের আমল ও ফজিলত

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়মঃ

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম – ১ঃ প্রথমে আপনি যেভাবে নামাজ পড়েন তাকবীর তাহরিমা বলে নিয়ত বাড়তে হবে।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম – ২ঃ এরপরে ছানা পড়তে হবে

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম – ৩ঃ এরপরে সুরা ফাতেহা পড়া

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম – ৪ঃ সূরার সাথে মিলিয়ে অন্য আরেকটি সূরা পড়া

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম – ৫ঃ অতঃপর আপনি যেভাবে নামাজ আদায় করেন অভাবে আপনাকে রুকু সেজদা আদায় করতে হবে।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম – ৬ঃ এভাবে দ্বিতীয় রাকাত নামাজ আদায় করে তাশাহুদ দরুদ ও দোয়া মাছুরা পড়ে সালাম ফেরাতে হবে এবং নামাজ শেষ করতে হবে।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত

প্রিয় বন্ধুরা আজকের এই আর্টিকেলে আমরা তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি নিশ্চয়ই তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানার জন্য আমাদের আর্টিকেল ওপেন করেছেন। আপনি যদি উক্ত আলোচনা অনুযায়ী তাহাজ্জুদের নামাজ পড়েন তাহলে আপনার নামাজ সঠিকভাবে পালিত হবে।

অনেকেই তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত কিভাবে করতে হয় এই সম্পর্কে জানতে চাই। আপনি চাইলে বাংলাতেও তাহাজ্জুদের নামাজের নিয়ত করতে পারবেন। নামাজের আগে আপনি বলবেন, “দুই রাকাত তাহাজ্জুদের নিয়ত করছি অতঃপর আল্লাহু আকবার বলে নিয়ত বেঁধে নামাজ শুরু করবেন”

তাহাজ্জুদ নামাজের সময়

আমরা অনেকেই তাহাজ্জুদের নামাজ কখন পড়তে হবে এ সম্পর্কে দ্বিধাদ্বন্দ্বে মধ্যে থাকি। আমরা তাহাজ্জুদের নামাজের সময় সম্পর্কে সঠিকভাবে না জানার কারনে তাহাজ্জুতের নামাজ পড়তে বিলম্ব করে অথবা আগে পড়ে নেই। কিন্তু তাহাজ্জুদ নামাজের সময় রয়েছে। যে সময়ের মধ্যে আপনি নামাজ আদায় করলে সবথেকে উত্তম।

তাহাজ্জুদ নামাজ রাতের শেষ তৃতীয়াংশে পড়া সবথেকে উত্তম। তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার জন্য আপনি মূলত রাত ২ টা থেকে শুরু করে ফজরের আযান এর আগ পর্যন্ত করতে পারবেন। তবে আপনি যদি ঘুম থেকে না জাগতে পারেন তাহলে এশার নামাজের পর দুই রাকাত সুন্নতের আগে পড়ে নেওয়া জায়েজ রয়েছে।

তাহাজ্জত নামাজের ওয়াক্ত 

তাহাজ্জুদ নামাজের ওয়াক্ত নিয়ে আমাদের মধ্যে অনেক দ্বিধা দ্বন্দ্ব রয়েছে। আশা করি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনার উত্তর বিষয়গুলো সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়ে যাবেন। ইশার নামায আদায়ের পর থেকে সুবহে সাদিক হওয়ার আগে পর্যন্ত আপনি তাহাজ্জুতের নামাজ পড়তে পারবেন। তাহাজ্জুদ নামাজ বলতে রাতের কিছু অংশে ঘুম থেকে জেগে নামাজ পড়া কে বোঝায়।

আরো পড়ুনঃ ইনশাআল্লাহ অর্থ কি

তাহাজ্জুদ নামাজের সর্বোত্তম সময় হল এশার নামাজের পর সবাই যখন ঘুমাবে তখন রাতের শেষাংশে নামাজ পড়া। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ গভীর রাতে ঘুম থেকে উঠে কখনো তার কিছু আগে অথবা পরে ঘুম থেকে উঠে আসমানের দিকে তাকিয়ে সূরা আলে ইমরান শেষ আয়াত পড়তেন। এরপর মেসওয়াক করে অজু করে নামাজ আদায় করতেন।

তাহাজ্জত নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত

আমরা সকলেই জানি যে তাহাজ্জুদের নামাজের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। পবিত্র কোরআন মাজিদে তাহাজ্জুদের নামাজের জন্য বিশেষভাবে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। ফরজ নামাজের পরে অন্যান্য সুন্নাত ও নফল নামাজের মধ্যে সবথেকে ফজিলতপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ নামাজ হলো তাহাজ্জুদের নামাজ।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমাদের প্রভু পারওয়ারদিগার তাবারাকা ওয়া তাআলা প্রত্যেক রাত্রে দুনিয়ার আসমানে নেমে আসেন যখন রাতের এক তৃতীয়াংশ বাকি থাকে। এরপরে তিনি বলেন তোমাদের কে আমাকে ডাকবে আমি তার ডাকে সাড়া দেব। কে আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে আমি তাকে ক্ষমা করে দেব।(মুসলিম মেশকাত ১০৯ পৃষ্ঠা)

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি রাতে ঘুম থেকে জেগে তাহাজ্জুতের নামাজ পড়ে এবং সে তার স্ত্রীকেও ঘুম থেকে জাগিয়ে নামাজ পড়ায় এমনকি সে যদি জেগে না উঠে তবে তার মুখে খালি গায়ে পানি ছিটিয়ে দেয় তাহলে তার প্রতি আল্লাহর রহমতে করে থাকেন। একইভাবে কোন মহিলা যদি তার স্বামীকে এভাবে জাগিয়ে দেয় তার প্রতি আল্লাহ তাআলা রহমত বর্ষিত করেন।(আবু দাউদ)

শেষ কথাঃ তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম

প্রিয় পাঠক আজকে আর্টিকেলে আমরা তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এছাড়া আরো অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলের আলোচনা করা হয়েছে আপনি যদি তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন। আশা করি আপনি তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

About sohansumona000@gmail.com

Check Also

হুন্ডি কি? জানুন হুন্ডি ব্যবসা হালাল নাকি হারাম?

অনেকে হুন্ডি ব্যবসার সাথে সম্পর্কিত কিন্তু এ বিষয়ে একটু দ্বিধাদ্বন্দের মধ্যে থাকেন তা হলো হুন্ডি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *