বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম | বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২১

বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২১ — ইন্টারনেট মোবাইল ব্যাংকিংয়ের বদৌলতে বর্তমান সময়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছে যে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা তারমধ্যে বিকাশ এবং নগদ সেবা অন্যতম। বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম অত্যন্ত সহজ। 

একজন গ্রাহক বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে নতুন বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবেন। এছাড়াও বিকাশের ওয়েবসাইট থেকেও ঘরে বসেই বিকাশ একাউন্ট খোলা যায় এবং বিকাশ এজেন্ট অথবা কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে নতুন বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলা যায় সহজেই।

বিকাশ কি

বিকাশ হচ্ছে ব্র্যাক ব্যাংক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক মানি ইন মোশন, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপের অর্ন্তভুক্ত ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স কর্পোরেশন, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এবং অ্যান্ট ফিনান্সিয়াল এর যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত পেমেন্ট সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান ২০১১ সাল থেকে বিভিন্ন ধরনের মোবাইল/ডিজিটাল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস প্রদান করে আসছে বিকাশ।

বিকাশ একাউন্ট খোলার সুবিধা

বর্তমান সময়ে একটি মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ একাউন্ট থাকার জন্য নানা রকম সুবিধা রয়েছে। ঘরে বসে থেকেই বিকাশ একাউন্ট খুলে উপভোগ করতে পারবেন বিকাশ এর সব ধরনের সুবিধা। বিকাশ একাউন্ট খোলার সুবিধা হচ্ছেঃ 

১। টাকা জমা করাঃ অনলাইনে পেমেন্ট গেটওয়ে রুপে অনেকেই বিকাশ ব্যবহার করে থাকে। বিকাশ অ্যাকাউন্ট ডিজিটাল ওয়ালেট হিসেবে ব্যবহার কাজ করে থাকে। ব্যাংক বিহীন ক্যাশ সিস্টেম হওয়ার কারণে বিকাশে টাকা জমা করার প্রসেসটি খুবই সহজ।
২। টাকা পাঠানোঃ বিকাশ ব্যবহার করা হয় মূলত টাকা লেনদেন করার জন্য। যেকোন সময়ে দেশের যেকোন স্থান থেকে দেশের অন্য প্রান্তে খুব সহজেই টাকা পাঠানো যায় বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে।
৩। টাকা তোলা ও পাঠানোঃ বিকাশ একাউন্ট থেকে টাকা যেকোনো সময় বিকাশ এজেন্টের কাছ থেকে ক্যাশ আউট ও ক্যাশ ইন করা যায়। তাছাড়াও ব্র‍্যাক ব্যাংক এটিএম ATM থেকেও বিকাশে টাকা ক্যাশ আউট করা যায়।
৪। মোবাইল রিচার্জঃ বিকাশ একাউন্ট থেকে মোবাইলে খুহ সহজেই নিমিষেই রিচার্জ করা যায়। মোবাইল রিচার্জ করার জন্য কোনো ফি প্রযোজ্য নাই। অর্থাৎ বাড়তি কোনো ফি প্রদান করা ছাড়াই বিকাশ অ্যাকাউন্ট হতে মোবাইলে রিচার্জ করা যায়।
৫। কেনাকাটাঃ বিভিন্ন প্রোডাক্ট বা পণ্য কেনাকাটা করা এবং সেবার মূল্য খুব সহজেই বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধ করা যায়। এছাড়াও ইন্টারনেট থেকে যেকোন কেনাকাটার ক্ষেত্রে বিকাশ ব্যবহার করে পেমেন্ট করা যায়।
৬। অন্যান্যঃ বিকাশ অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে বিদেশ থেকে টাকা গ্রহণ, বিকাশে ট্রেনের টিকিট, বিকাশে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ, যানবাহনের টিকেট কেনার মতো ইত্যাদি আরও অনেক সুবিধা গ্রহণ করা যায়।
৭। বিকাশ অফারঃ বিকাশে একাউন্টে সবসময় বিভিন্ন ধরনের অফার, বোনাস এবং ক্যাশব্যাক ক্যাম্পেইন চলতেই থাকে।

বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড

অ্যান্ড্রয়েড Android ও আইওএস IOS – উভয় ধরনের স্মার্টফোনে ব্যবহার করতে পারবেন বিকাশ অ্যাপ।

বিকাশ একাউন্ট খুলতে কি লাগে

বিকাশ একাউন্ট খুলতে যা যা লাগেঃ

১। একটি সচল মোবাইল নাম্বার
২। ডাটা কানেকশন
৩। বিকাশ অ্যাপ ইন্সটল করা স্মার্টফোন 
৪। ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড)
৫। ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি (এজেন্ট অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে)

ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম

ঘরে বসে নিজে নিজেই বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য প্রথমেই উপরোক্ত দেওয়া লিংক থেকে বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করে ইন্সটল করে নিন। তারপর নিচে দেওয়া পদ্ধতি অবলম্বন করুন। ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম —

১। বিকাশ অ্যাপটি ওপেন করে ‘লগ ইন/রেজিষ্ট্রেশন’ বাটনে ক্লিক করুন।
২। লগ ইন/রেজিষ্ট্রেশন বাটনে ক্লিক করার পরবর্তী পেজে আপনি যে নাম্বার ব্যবহার করে বিকাশ একাউন্ট খুলতে চান সেই নাম্বারটি টাইপ করে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন
৩। তারপর আপনার মোবাইল নাম্বারটির অপারেটর সিলেক্ট করে নিন এবং পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
৪। এরপর আপনার মোবাইল নাম্বারটি যাচাই করার জন্য আপনার প্রদত্ত নাম্বারে একটি ওটিপি OTP (One Time Password) কোড পাঠানো হবে। উল্লেখ্য যে, বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলার জন্য যে স্মার্টফোনে বিকাশ খুলছেন সেই ফোনেই সিমটি কার্ডটি সচল রাখতে হবে।
৫। ওটিপি OTP কোডের মেসেজ আসার সঙ্গে সঙ্গে Allow অপশনটি ক্লিক করতে হবে যার ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে OTP কোডটি বিকাশ অ্যাপ গ্রহণ করে নিবে।
৬। কোড চলে আসার পর ‘কনফার্ম করুন’ এই অপশনে ক্লিক কর।
৭। তারপর জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড (এনআইডি কার্ড) অর্থাৎ এনআইডি কার্ডের ফন্ট সাইজের ছবি তুলে সাবমিট করে ‘সাবমিট করুন’ এই অপশনে ক্লিক করুন।
৮। এরপর পিছনের পৃষ্ঠার ছবি তুলে ‘সাবমিট করুন’ এ ক্লিক করুন।
৯। তারপর সাবমিটকৃত জাতীয় পরিচয়পত্রে যার ছবি রয়েছে তাকে ফোনে একটি সেল্ফি তুলতে হবে। যা দ্বারা আইডেন্টিটি ভেরিফিকেশন করা হয়।
১০। চেহারার ছবি তুলে সাবমিট করার পরেই নতুন বিকাশ একাউন্ট খোলা হয়ে যাবে।

বিকাশ এজেন্ট কি?

বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট এর প্রতিনিধিদের বিকাশ এজেন্ট বলা হয়। বিকাশ এজেন্টরা স্থানীয় ভাগে বিকাশের সকল ধরনের সেবা প্রদান করে থাকেন। বিকাশ এজেন্টগণ টাকা ক্যাশ আউট, ক্যাশ ইন বা বিদ্যুৎ বিল সহ অন্যান্য বিল প্রদানের মতো বিকাশ সেবা গুলো গ্রাহকদের প্রদান করে থাকেন। বিকাশ এজেন্টগণ শতকরা কমিশন হারে টাকা ইনকাম করে থাকেন।

বিকাশ এজেন্ট হতে কত টাকা লাগে?

বিকাশ এজেন্ট হতে কত টাকা লাগে এমন কোনো নির্দিষ্ট টাকার পরিমাণ জানাননি বিকাশ কতৃপক্ষ। অর্থাৎ বিকাশের ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে এমন যে কেউ ইচ্ছা করলেই বিকাশ এজেন্ট হতে পারবেন।

বিকাশ এজেন্ট হতে কি কি লাগে?

ইন্টারনেট মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ ব্যবহার করে ব্যাবসা করতে চাইলে তাহলে হতে বিকাশ এজেন্ট। সেই ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত তথ্য এবং ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে বিকাশ এজেন্ট হবার জন্যঃ 

১। বিকাশ এজেন্ট নিতে ইচ্ছুক ব্যাক্তির ২কপি ছবি পার্সপোর্ট সাইজের প্রয়োজন
২। জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ড/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স
৩। ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে অবশ্যই
৪। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা
৫। যোগাযোগ এর নাম্বার ও ঠিকানা

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

বিকাশ এজেন্ট হবার জন্য উপরোক্ত তথ্য এবং ডকুমেন্টের সহিত নিকটস্থ বিকাশ কাস্টোমার কেয়ারে যোগাযোগ করতে হবে। বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে ফর্ম ফিলাপ করার মাধ্যমে বিকাশ এজেন্ট হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এছাড়াও এই ফর্মটি ফিল-আপ করার মাধ্যমে আপনি অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট তৈরী করার জন্য।

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট কি?

ব্যবসায়িক লেনদেন পরিচালনা করার জন্য বিকাশ মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিকাশ পার্সোনাল একাউন্টের চেয়ে বেশ কিছু অন্যান্য সুবিধা পাওয়া যায় বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট এর মাধ্যমে।

বিকাশ মার্চেট একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে?

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য নিচের দেয়া তথ্য এবং ডকুমেন্ট সমূহ প্রয়োজন হবেঃ

১। ইন্টারনেট কানেক্ট সহ একটি স্মার্টফোন
২। এনআইডি কার্ডের ফটোকপি
৩। ২কপি পার্সপোট সাইজ এর ছবি
৪। মেয়াদ রয়েছে এই ধরনের প্রতিষ্ঠান এর ট্রেড লাইসেন্স

বিকাশ মার্চেট একাউন্ট খোলার নিয়ম

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার আবেদন করতে পারবেন এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করে। আবেদন পর ফর্মে উল্লেখিত ফোন নম্বরে কল করে বিকাশ মার্চেন্ট অফিসে আপনাকে আসার জন্য বলা হবে। প্রয়োজনীয় তথ্য এবং ডকুমেন্ট সহকারে বিকাশ মার্চেন্ট অফিসে সাবমিট করার পরে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট তৈরী হবে।

বিকাশ একাউন্ট সম্পর্কে প্রশ্নসমূহ
কে বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবে?

উত্তরঃ ১৮ বছরের উপরের থেকে অধিক বয়সী বাংলাদেশ এর নাগরিক প্রয়োজনীয় এনআইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স অথবা পাসপোর্ট থাকলে বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবে।

বিকাশ একাউন্ট খুলতে কত টাকা খরচ হয়?

উত্তরঃ বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য কোনো টাকা খরচ লাগেনা, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে যে কেউ বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারেন।

বিকাশ একাউন্ট খুলতে কি ব্যাংক একাউন্ট লাগে?

উত্তরঃ না, বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য কোন ব্যাংক একাউন্ট থাকার প্রয়োজন হয়না।

বিকাশ একাউন্ট খুলতে কোথায় যেতে হবে?

উত্তরঃ উপরোক্ত বর্ণিত পদ্ধতি অবলম্বন করে যে কেউ নিজে নিজেই ঘরে বসেই বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবে। তবে এতেও যদি কোন সমস্যা হয় তাহলে সেই ক্ষেত্রে নিকটস্থ বিকাশ এজেন্টগণ বা বিকাশ কাস্টোমার কেয়ারে গিয়ে বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবেন।

একটা nid দিয়ে কয়টি বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়

উত্তরঃ একটা nid দিয়ে একটা বিকাশ একাউন্ট করা যায়

বিকাশ এর পিন ভুলে গেলে কি করবো?

উত্তরঃ বিকাশ এর পিন নিজে নিজে রিসেট করতে মোবাইল *২৪৭# ডায়াল করে ৯ চাপুন এবং স্ক্রিনে দেখানো ইনস্ট্রাকশান অবলম্বন করুন। এছাড়াও আপনি 16247 নাম্বারে কল করে বিকাশ থেকে সাহায্য নিতে পারেন। support@bkash.com ও livechat.bkash.com ব্যবহার করেও সহায়তা পাবেন। অথবা যোগাযোগ করতে পারেন আপনার নিকটস্থ বিকাশ এজেন্ট বা কাস্টমার কেয়ারে।

আরও পড়ুনঃ ব্রিলিয়ান্ট কানেক্ট অ্যাপ | কথা বলুন মাত্র ৩০ পয়সা মিনিট যেকোন নাম্বারে

About sohansumona000@gmail.com

Check Also

ব্রাক ব্যাংক ভিসা কার্ড নিন খুব সহজে একদম বিনামুল্যে

ব্রাক ব্যাংক ভিসা কার্ড – আসসালামু আলাইকুম। টেকনিক্যাল কেয়ার বিডি এর নতুন আরো একটি পোস্টে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *