বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক

আপনি কি বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছেন? প্রিয় পাঠক আপনি জানলে অবাক হবেন যে, আমাদের দেশে ইতিমধ্যে বিনা জামানতে বেশ কিছু ব্যাংক থেকে ঋণ দেওয়া হচ্ছে।

এই ব্যাংক গুলো সরকার ও বেসরকারী কর্তৃক বেকার যুব সমাজকে কর্মসংস্থান লক্ষ্যের উদ্দেশ্যে ঋণ দিয়ে থাকে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের দেশে প্রায় অধিকাংশ মানুষ বেকার। আজকাল পড়াশোনা করেও চাকরি পাওয়া অনেক কঠিন একটা বিষয়।

বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক

(toc) #title=(সুচিপত্র)

অন্যদিকে মূলধন না থাকায় কোনো রকম ব্যবসা ধরতে না পেরে চাকরির পিছে পিছে দৌড়াতে হয়। এই সব কথা চিন্তা করে বাংলাদেশ সরকার ও বেসরকারি কিছু প্রতিষ্ঠান বিনা জামানতে যুব সমাজ ও বেকার জনগোষ্টীকে ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। 

যেন, তারা সেই ঋণ দিয়ে মূলধন ঘাটিয়ে ব্যবসা করার মাধ্যমে নিজেকে স্বাবলম্বী করে তুলতে পারে। এই সব ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য আপনার কোনো রকম জামানতের প্রয়োজন হবে না। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক, বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক ? 

প্রিয় পাঠক বিনা জামানতে ঋণ নেয়ার সময় অবশ্য মনে মনে আপনি এই সংকল্পটি করবেন না যে নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পরে আপনি ব্যাংক ঋণ মেরে দিয়ে নিজেকে দেউলিয়া করে উদাও হয়ে যাবেন। যদি এমনটি ভাবেন তবে আপনি পরবর্তীতে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হবেন। তাহলে আর অতিরিক্ত কথা না বলে চলুন জেনে নেই বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক ?

আরো পড়ুনঃ গরুর খামার করতে ব্যাংক লোন

বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক

আমাদের দেশে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে, যারা বিনা জামানতে বেকার যুবকদের ঋণ প্রদান করে থাকে। নিম্নোক্ত ব্যাংক গুলো যুবকদের বিনা জামানতে ঋণ প্রদান করে থাকে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যঃ

  • কর্মসংস্থান ব্যাংক
  • মিচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক
  • প্রাইম ব্যাংক
  • ব্র্যাক ব্যাংক
  • গ্রামীণ ব্যাংক
  • ন্যাশনাল ব্যাংক
  • সোনালি ব্যাংক
  • অগ্রণী ব্যাংক
  • এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক
  • পূবালী ব্যাংক

১। কর্মসংস্থান ব্যাংক

কর্মসংস্থান ব্যাংকটি মূলত বেকার জনগোষ্ঠীর এর সহায়তা করার লক্ষ্যে ১৯৯৮ সালে সরকার কর্তৃক সর্বপ্রথম চালু করা হয়। আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বেকার শিক্ষিত অথবা অশিক্ষিত বেকার যুবক সমাজকে সরকার কর্তৃক এই ব্যাংক থেকে ঋণ প্রদান করা হয়। কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে বেকার যুবক অন্যান্য ব্যাংক থেকে অধিক পরিমাণ ঋণ সহ সরকারি সকল রকম সুবিধা পেয়ে থাকে। 

এক্ষেত্রে অবশ্যই ঋণ গ্রহীতাকে বেকার/অর্ধ বেকার ও সাধারণ উদ্যোক্তা হতে হবে এবং যে এলাকা থেকে ঋণ গ্রহণ করবে, অবশ্যই সে এলাকার স্থায়ী একজন বাসিন্দা হতে হবে। আবেদনকারী সর্বনিম্ন ৫ম শ্রেণী পাস হতে হবে। 

আবেদনকারীর বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বছর থেকে ৩০ বছর হতে হবে। তবে ৪০ বছর শিথিলযোগ্য। আপনাকে বিনা জামানতে ঋণ পেতে হলে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, বিডা, বিসিক, সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হতে হবে।

কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে যেসব খাতে বিনা জামানতে ঋণ দেওয়া হয়। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যঃ 

  • প্রাণিসম্পদ খাত
  • মৎস্য খাত
  • যানবাহন ও পরিবহন সেবা
  • শিল্প কারখানা
  • সেবা খাত ও বাণিজ্যিক খ্যাত
  • উৎপাদনশীল প্রকল্প।

ঋণ মূলত সরল সুদে পূরণ করতে হয়। ঋণের সুদের পরিমাণ যথাক্রমেঃ 

  1. ক্ষুদ্র ব্যবসা খাতে ১৩%
  2. কৃষিভিত্তিক শিল্প স্থাপনে ৮% থেকে ৯%
  3. পানি সম্পদ উন্নয়ন খাতে ১০%
  4. দুগ্ধ উৎপাদন ও কৃত্রিম প্রজনন খাতে ৫%
  5. উৎপাদনশীল খাতে ১১%
  6. বাণিজ্যিক খাতে ১৩%
  7. ঋণের পরিমাণ সর্বনিম্ন ৫ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা দেওয়া হয় এবং ঋণ মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে হয়।

আরো পড়ুনঃ কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি

২। মিচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশের একটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক। এটি ১৯৯৯ সালের ২৯ শে সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় রাজধানী ঢাকার ২৬ গুলশান এভিনিউতে অবস্থিত।

মিচুয়্যাল ট্রাস্ট ব্যাংক নির্দিষ্ট টাকার উপরে বিনা জামানতে ঋণ সুবিধা প্রদান করে থাকে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে একজন গ্যারান্টার বা প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট অথবা আপনার ব্যাংক লোনের যোগ্যতা যাচাই-বাছাই করা হবে।

৩। প্রাইম ব্যাংক

প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের অন্যতম একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক। এটি ১৯৯৫ সালে যাত্রা শুরু করে। ব্যাংকটি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ -এ নিবন্ধিত। মিচুয়্যাল ট্রাস্ট ব্যাংকের মতো প্রাইম ব্যাংকও নির্দিষ্ট পরিমাণ ঋণের উপর জামানত বিহীন ঋণ সুবিধা দিয়ে থাকে। তবে এই ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র ব্যাংকের নিকট পেশ করতে হবে।

৪। ব্র্যাক ব্যাংক

ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড (BRAC Bank Limited) বাংলাদেশের স্বায়ত্তশাসিত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি মূলত; বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক কর্তৃক পরিচালিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এই ব্যাংকটি সেরা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘বাংলাদেশ বিজনেস এওয়ার্ড-২০০৯’ পদক অর্জন করেছে। 

ব্র্যাক ব্যাংক ইতিমধ্যে বিনা জামানতে বেকার জনগোষ্ঠীকে ঋণ প্রধান করে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে পরিচিত লাভ করে। তবে এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র ব্যাংকের নিকট পেশ করতে হবে। ব্র্যাক ব্যাংক জামানত বিহীন ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ অর্থায়নকারী ব্যাংক, যা দেশের ৫০ শতাংশ বাজার নিয়ন্ত্রণ করে।

৫। গ্রামীণ ব্যাংক

নোবেল বিজয়ী এই ব্যাংক, প্রায় শুরু থেকেই বিনা জামানতে ঋণ প্রদান করে আসছে। মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থান সুযোগ করে দিয়েছে এবং বেকার জনগোষ্ঠীকে কর্মসংস্থান তৈরির ক্ষেত্রে সহায়তা করে এসেছে। ব্যাংক থেকে চাওয়া সব রকম তথ্যাদি ও কাগজপত্র পেশ করতে হবে। সকল রকম কাগজপত্র চেক করার পর যোগ্য ব্যক্তিরাই কেবল বিনা জামানতে ঋণ সেবা পাবেন।

৬। অগ্রণী ব্যাংক

বিনা জামানতে ঋণ দেয় অগ্রণী ব্যাংক। অগ্রণী ব্যাংক তাদের এই ঋণ প্রকল্পের নাম দিয়েছে “প্রবাসী ঋণ প্রকল্প”। অগ্রণী ব্যাংক সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ টাকা ঋণ প্রদান করে থাকে। ১৮ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ বছরের বাংলাদেশি যেকোনো নাগরিক বিদেশ যাওয়ার জন্যে অগ্রণী ব্যাংক থেকে ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩ লাখ টাকা ঋণ নিতে পারবেন। অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিনা জামানতে ঋণ নিতে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাছে থেকে।

৭। সোনালী ব্যাংক

বিনা জামানতে ঋণ দেয় সোনালী ব্যাংক এবং তারা তাদের এই প্রকল্পটির নাম দিয়েছে “প্রবাসী কর্মসংস্থান ঋণ প্রকল্প”। সোনালী ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ লোনের পরিমাণ ৩ লক্ষ টাকা। এই লোন পরিশোধের সর্বাধিক প্রদানের সময় ৩ বছর। সোনালী ব্যাংক বিনা জামানতে ঋণ ২ বছরে ২৪টি কিস্তিতে এবং ৩ বছরে ৩৬টি কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে বলে থাকে।

এখানে আপনি উভয় মেয়াদে ৩ মাসের গ্রেস পিরিয়ড পাবেন। লোন পরিশোধ করার জন্য আপনাকে প্রতিমাসে ১ টি কিস্তি পরিশোধ কর‍তে হবে। সরল সুদের হিসেবে লোনের সুদের হার ১২ শতাংশ অর্থাৎ লোনের সুদের উপর কোনো সুদ নেয়া হবেনা।

বিনা জামানতে ঋণ নিতে আপনাকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মতো করে লোনের জন্য আবেদন করতে হবে। বিনা জামানতে ঋণ কিভাবে পাবেন তা আমরা নিচে স্টেপ বাই স্টেপ দেখিয়ে দিয়েছি।

আরো পড়ুনঃ বাইক কেনার জন্য ব্যাংক লোন

৮। পূবালী ব্যাংক

বিনা জামানতে ঋণ দেয় পূবালী ব্যাংক। পূবালী ব্যাংক তাদের এই প্রকল্পটির নাম দিয়েছে নন রেসিডেন্ট ক্রেডিট স্কিম’। পূবালী ব্যাংক সর্বোচ্চ ২.৫ লক্ষ টাকা বিনা জামানতে ঋণ দিয়ে থাকে। এই ঋণ পরিশোধের মেয়াদ থাকছে ২ বছর।

প্রতিমাস কিস্তিতে লোন পরিশোধ করতে পারবেন। প্রথম ২ মাস থাকছে গ্রেস পিরিয়ড। পূবালী ব্যাংকে সুদের হার ১৩ শতাংশ। এই ঋণ নিতে আপনাকে কোনো প্রকার জামানত দিতে হবে না।

৯। এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক

বিনা জামানতে ঋণ দেয় এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক। এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক তাদের এই প্রকল্পটির নাম দিয়েছে ‘এনআরবি মাইগ্রেশন লোন’। এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক থেকে আপনি সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ টাকা নিতে পারবেন।

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকে সুদের হার ১৪ শতাংশ। লোন পরিশোধের মেয়াদ থাকছে ১, ২ ও ৩ বছর। অর্থাৎ আপনাকে ১-৩ বছরের মধ্যে আপনাকে লোন পরিশােধ কর‍তে হবে। 

এখানে আপনি উভয় মেয়াদে গ্রেস পিরিয়ড পাবেন ৩ মাস। বিদেশ যাওয়ার ৩ মাস পরে থেকে আপনাকে লোনের মাসিক কিস্তি পরিশোধ শুরু করতে হবে। এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক থেকে বিনা জামানতে সর্বনিম্ন বয়স ১৮ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৫৫ বছরের বাংলাদেশি যেকোনো নাগরিক ঋণ নিতে পারবেন।

১০। ন্যাশনাল ব্যাংকঃ বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে বিনা জামানতে ঋণ নিতে পারবেন। বিনা জামানতে ঋণ নিতে ন্যাশনাল ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে সরাসরি কথা বলুন তারা আপনাকে বিস্তারিত তথ্য বুঝিয়ে বলবেন।

কারা পাবেন বিনা জামানতে ঋণ?

বিভিন্ন ব্যাংকের ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম হয়ে থাকে। যার ভিত্তিতে তারা বিনা জামানতে ঋণ সেবা প্রদান করে থাকে। তবে প্রায় সব ব্যাংকের ক্ষেত্রে বিনা জামানতের এই ঋণ সেবা জন্য আবেদনকারীর বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বছর থাকা লাগবে।

এর কম হলে কোন রকম ভাবেই তাঁকে বিনা জামানতে ঋণ সেবা প্রদান করা হবে না। অবশ্যই ঋণ গ্রহিতাকে বেকার/ অর্ধ বেকার হতে হবে এবং যে এলাকা থেকে ঋণ গ্রহণ করবে, অবশ্যই সে এলাকার স্থায়ী একজন বাসিন্দা হতে হবে।

কত টাকা ঋণ নেওয়া যাবে?

সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা হতে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনা জামানতে ঋণ পাওয়া যাবে। তবে নির্দিষ্ট কিছু ব্যাংক নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার উপরে বিনা জামানতে ঋণ প্রদান করে থাকে। এই ঋণ মূলত সরল সুদে দেওয়া হয়ে থাকে এবং ঋণ মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে হয়। ক্ষেত্রবিশেষ এর সুদ ৫% থেকে ১০% বা এর অধিক হয়।

কিভাবে বিনা জামানতে ঋণ নেবেন?

আপনি যে ব্যাংক থেকে বিনা জামানতে ঋণ সেবা গ্রহণ করতে যাবেন। সেই ব্যাংক কর্তৃক আপনাকে একটি আবেদন ফর্ম পূরণ করতে বলবে। আবেদন ফরম পূরণ করার পাশাপাশি যাবতীয় সকল রকমের কাগজপত্র ও ডকুমেন্টস দেওয়ার মাধ্যমেই আপনি বিনা জামানতে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবেন।

যিনি গ্রহণ করবেন তাকে অবশ্যই তার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি প্রদান করতে হবে সাথে পাসপোর্ট সাইজের ছবি দিতে হবে। ঋণগ্রহীতার পাশাপাশি দু থেকে তিনজন গ্যারান্টর দরকার হবে এবং তাদের সম্মতির সাথে সাথে তাদের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি দিতে হবে। 

এখানে গ্যারান্টার বলতে এমন একজনকে বুঝানো হয়েছে, আপনি যদি উক্ত ঋণ পরিশোধ না করেন বা পরিশোধ না করতে পারেন তাহলে উক্ত গ্যারান্টার ব্যক্তিকে সেই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। বেকার যুবক যে খাতে ঋণ গ্রহণ করে থাকবে তাকে অবশ্যই সেই খাতে ব্যবসায়ী ট্রেন্ড লাইসেন্স বা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত থাকতে হবে।

বিনা জামানতে ঋণ নেয়ার জন্য যে সকল তথ্য প্রয়োজন হয় তা নিম্নে দেওয়া হলাে। বিনা জামানতে ব্যাংক ঋণ এর শর্তাবলী

  1. ঋণ গ্রহীতাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
  2. সর্বনিম্ন ৫ম শ্রেণি পাশ করতে হবে
  3. বেকার/অর্ধ বেকার হতে হবে
  4. শাখার অধিক্ষেত্রের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। স্থায়ী বাসিন্দা না হলে শাখার অধিক্ষেত্রের একজন স্থায়ী বাসিন্দাকে ঋণের গ্যারান্টার হতে হবে
  5. বয়স সাধারণত ১৮ থেকে ৫০ বছর হতে হবে। কর্মসংস্থান ব্যাংকের পুরাতন ঋণগ্রহীতাদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা শিথিলযোগ্য। অর্থাৎ পুরাতন ঋণগ্রহীতাদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা শিথিলযোগ্য। ঋণ গ্রহীতাকে ইকুইটি বহনের ক্ষমতা থাকতে হবে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
  6. প্রকল্প পরিচালনার বিষয়ে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ/অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। অর্থাৎ লোনের জন্য ২ বছরের ব্যবসার অভিজ্ঞতা এবং বেসিসের সুপারিশপত্রের প্রয়োজন হবে।
  7. ঋণ ব্যবহারের যোগ্যতাসহ ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা ও আর্থিক আচরণে সুনামের অধিকারী হতে হবে। ব্যবসায়ের আয়-ব্যয় বিবরণী হিসাব থাকতে হবে।
  8. ঋণ ব্যবহারের যোগ্যতাসহ ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা ও আর্থিক আচরণে সুনামের অধিকারী হতে হবে।
  9. অন্য কোনো ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এনজিও অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঋণখেলাপী হলে ঋণ পাওয়ার যোগ্য হবেন না
  10. ঋণ নীতিমালার অন্যান্য নিয়ম অনুসরণে সক্ষম হতে হবে।
  11. ব্যাংকের নিকট গ্রহনযোগ্য ব্যবসায়ী হতে হবে।
উপরোক্ত রিকোয়ারমেন্ট যদি আপনার মধ্যে ঠিকঠাক থাকে তবে আপনি বিনা জামানতে ঋণ উপরোক্ত ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবেন।

বিনা জামানতে ঋণ নিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

  • জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি লাগবে।
  • বিনা জামানতে ঋণ নিতে আবেদনকারীর গ্যারেন্টারের ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের সদ্য তোলা সত্যায়িত ছবি প্রয়োজন।
  • বিনা জামানতে ঋণ নিতে আবেদনকারীর ইউটিলিটি বিলের ফটোকপি প্রয়োজন যেমনঃ বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, ওয়াসা বিল ইত্যাদি।
  • দলিল/পর্চার ফটোকপিসহ স্থানীয় ইউ.পি চেয়ারম্যান/পৌর মেয়র/ সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলার বা চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট প্রয়োজন।
  • ব্যবসায়ীর ক্ষেত্রে আপডেট ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন। এছাড়াও আপডেট টিন সার্টিফিকেট থাকলে ভালো।
  • প্রশিক্ষণ/অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেটের সত্যায়িত ফটোকপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
  • উদ্যোক্তা/গ্যারান্টারের স্থায়ী বাসিন্দার প্রমাণপত্র
  • প্রকল্প এলাকায় অবস্থিত ব্যাংকের ঋণ প্রদানকারী শাখায় নির্ধারিত ফরমে ঋণের আবেদন করতে হবে

লেখকের শেষকথা

আমরা ইতিমধ্যে সরকারি ও বেসরকারি বিনা জামানতে ঋণ প্রদানকারী বেশ কিছু ব্যাংকের কথা উল্লেখ করেছি। যারা আমাদের দেশে বেকার জনগোষ্ঠী ও মহিলাদের আত্ম-কর্মসংস্থান তৈরিতে সহায়তা করেছে। 

আপনি যেই ব্যাংক থেকে ঋণ সেবা গ্রহণ করতে চান না কেন! উক্ত ব্যাংক সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিবেন। প্রত্যেক ব্যাংকের হেল্প সেন্টার থাকে, প্রয়োজনে কল করে ঋণ, ঋণের সুদের পরিমান ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নিবেন।

বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক সম্পর্কে লেখাটি আপনার কাছে ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করবেন। বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক লেখাটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

About sohansumona000@gmail.com

Check Also

ট্রাফিক আইন জরিমানা মোটরসাইকেল ২০২৫: জেনে নিন সব কিছু

বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে বাংলাদেশ সরকার নতুন ট্রাফিক আইন প্রবর্তন করেছেন। বিশেষ করে যারা ট্রাফিক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *